শিরোনাম
ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের প্রায় ১২শ’ সক্রিয় ও সাবেক কর্মকর্তা। সরকার ও সেনা প্রধানের কাছে চিঠি লিখে তারা এই আহ্বান জানিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘হারেৎজ’।
তেল আবিব থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপে পরিণত হয়েছে। এই যুদ্ধ ইসরাইলের নিরাপত্তার লক্ষ্যে নয় বরং এটা ইসরাইলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে।
চিঠিতে তারা গাজা থেকে সকল ইসরাইলি বন্দিকে অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সতর্ক করে দিয়েছেন, চলমান সামরিক অভিযান তাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। পাশাপাশি সেনা ও নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের জীবনকেও বিপন্ন করে তুলতে পারে।
চিঠিতে ভাষ্য অনুযায়ী, ‘আমরা সাবেক ও বর্তমান রিজার্ভ অফিসার ও কমান্ডাররা গাজায় চলমান রাজনৈতিক যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং সব জিম্মির নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এই যুদ্ধ ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তায় কোনো কাজে আসছে না বরং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য।
চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, সংঘাত দীর্ঘায়িত করলে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হতে পারে। আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ইসরাইলের সামরিক স্বার্থেও নয় এবং এর নৈতিক মূল্যবোধের সাথেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, ‘এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া জনগণের বৃহৎ অংশের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাচ্ছে। এতে জিম্মি, ইসরাইলি সেনা ও নিরপরাধ বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারাবে। এমনকি যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের সম্ভাবনাও রয়েছে।’
এরআগে গত মাসের মাঝামাঝি যুদ্ধ বন্ধ ও বন্দিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে একটি খোলা চিঠি দেন সহস্রাধিক ইসরাইলি রিজার্ভ সেনা। এছাড়া যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে একই সময়ে একটি স্বাক্ষর অভিযান চালানো হয়। পাঁচ দিনের মধ্যে ১ লাখেরও বেশি ইসরাইলি আবেদনে স্বাক্ষর করে।
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইল যেন জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেয়, সে জন্য দেশটির ওপর চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি ও ফিনল্যান্ড। গত মঙ্গলবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে এক আলোচনার পর এই আহ্বান জানান জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস ও ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অর্পো।
গত প্রায় ২০ মাস ধরে গাজায় সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। গত কয়েক সপ্তাহে হামলা বাড়িয়েছে তারা। একই সঙ্গে সেখানে ১১ সপ্তাহ ধরে ত্রাণ প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। সম্প্রতি গাজায় সীমিত পরিসরে ত্রাণ ঢুকতে দেয়া হলেও তা ঠিকমতো হাতে পাচ্ছেন না ফিলিস্তিনিরা। এমন বাস্তবতায় ইসরাইলের এই নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে আসছেন বিভিন্ন দেশের নেতারা।