শিরোনাম
ঢাকা ২৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : মঙ্গলবার বিনিয়োগকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত সর্বশেষ পরিস্থিতির অপেক্ষায় থাকায় বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। এদিকে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতির উন্নতি ঘটলে সুদের হার আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়ায় ইয়েনের মান বেড়ে গেছে।
হংকং থেকে এএফপি জানায়, ওয়াল স্ট্রিট ছুটির কারণে বন্ধ থাকায় বাজারে বড় কোনো চালক অনুপস্থিত ছিল, যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি এবং পরে তা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা ফিরিয়ে এনেছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, ট্রাম্পের খামখেয়ালি নীতিগত ঘোষণাসমূহ এবং করছাড় বাড়ানোর পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ন করছে এবং ট্রেজারি বন্ডের ফলনহার বাড়াচ্ছে।
এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের স্টিফেন ইনেস বলেন, 'বাজার আবারও উত্তপ্ত কয়লার ওপর নাচছে—হোয়াইট হাউজের মুড সুইংয়ের আগাম অনুমান করতে গিয়ে বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিস্ফোরণের আশঙ্কায় থাকছেন।'
'লভ্যাংশ যেভাবে নেহাইর মতো ঝুলছে এবং শুল্ক হুমকিগুলো যেভাবে বিধ্বংসী বলের মতো দোল খাচ্ছে, সেখানে একমাত্র নিশ্চিত বিষয় হলো—সংগীত থামবে না, যতক্ষণ না আপনা থেকে হঠাৎ থেমে যায়। ট্রেডারদের জুতোর ফিতা বাঁধা রাখতে হবে।'
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লায়েন দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর অঙ্গীকার করার পর ইউরোপীয় বাজারে ইতিবাচক সাড়া পড়ে।
তবে এশীয় বাজারে ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে।
হংকং, সিডনি, সিঙ্গাপুর, জাকার্তা, ম্যানিলা ও ওয়েলিংটন বেড়েছে, অপরদিকে টোকিও, সাংহাই, সিউল ও তাইপে সূক্ষ্ম পতনে গেছে।
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর কাজুও উয়েদা বলেছেন, অর্থনীতি প্রত্যাশামতো এগোলে সুদের হার ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে—এই মন্তব্যের পর ইয়েনের মান ডলারের বিপরীতে বেড়ে গেছে।
টোকিওতে এক সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আমরা প্রয়োজনে মুদ্রানীতির শিথিলতার মাত্রা সামঞ্জস্য করব।'
ট্রাম্পের শুল্ক আক্রমণের কারণে এ মাসের শুরুতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করার পর উয়েদার এ মন্তব্য আসে।
তিনি বলেন, 'বিশেষ করে বাণিজ্যনীতির সংশ্লিষ্টতা বিবেচনায় সাম্প্রতিক অনিশ্চয়তা বিবেচনায় আমাদের অর্থনৈতিক ও মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস হালনাগাদ করেছি।' তবে তিনি যোগ করেন, মূল্যবৃদ্ধি হ্রাস পেয়ে ব্যাংকের দুই শতাংশ লক্ষ্যমাত্রায় ফিরে আসবে বলে তিনি এখনও আশা করেন।
ডলারের বিপরীতে ইয়েনের মান বেড়ে দাঁড়ায় ১৪২.১২ ইয়েনে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত অনিশ্চয়তা ডলারের ওপর চাপ তৈরি করছে।
পেপারস্টোনের ক্রিস ওয়েস্টন বলেন, 'একভাবে বলা যায়, সব পথ এখন দুর্বল ডলারের দিকেই যাচ্ছে। বড় ঘাটতির আশঙ্কা ভবিষ্যতে বেশি ট্রেজারি বন্ড ইস্যু হওয়ার ভয় সৃষ্টি করছে, যার ফলে সময়কালীন প্রিমিয়াম বাড়ছে এবং বিনিয়োগকারীরা ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।'
'২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি দুর্বল হওয়ার আশঙ্কায় ডলার বিক্রেতা বেড়েছে। শুল্ক ঝুঁকি আবার মাথাচাড়া দিলে ডলার পড়ে, আর শুল্ক বাস্তবায়ন পেছালে আরও পড়ে।'
বিনিয়োগকারীরা ফেডারেল রিজার্ভের মে মাসের নীতিগত বৈঠকের কার্যবিবরণীর অপেক্ষায় আছেন, যেখানে ট্রেড যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। এ সপ্তাহের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পছন্দের মূল্যস্ফীতি সূচকও প্রকাশিত হবে।
- জিএমটি ০২:৩০ নাগাদ মূল সূচক -
টোকিও - নিক্কেই ২২৫: ০.২ শতাংশ কমে ৩৭,৪৪০.৩২ পয়েন্ট (বিরতি)
হংকং - হ্যাং সেং সূচক: ০.১ শতাংশ বেড়ে ২৩,৩১৫.৯৯ পয়েন্ট
সাংহাই - কম্পোজিট: ০.১ শতাংশ কমে ৩,৩৪৪.৯৫ পয়েন্ট
ডলার/ইয়েন: কমে ১৪২.১২ ইয়েন (সোমবার ছিল ১৪২.৮১ ইয়েন)
ইউরো/ডলার: বেড়ে ১.১৪০৫ ডলার (আগে ছিল ১.১৩৮২ ডলার)
পাউন্ড/ডলার: বেড়ে ১.৩৫৮৫ ডলার (আগে ছিল ১.৩৫৬৩ ডলার)
ইউরো/পাউন্ড: বেড়ে ৮৩.৯৫ পেন্স (আগে ছিল ৮৩.৯১ পেন্স)
ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট: ০.৩ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬১.৩৬ ডলার
ব্রেন্ট নর্থ সি ক্রুড: ০.২ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৪.৬০ ডলার
নিউইয়র্ক - ডাও: ছুটির কারণে বন্ধ
লন্ডন - এফটিএসই ১০০: ছুটির কারণে বন্ধ