বাসস
  ২৭ মে ২০২৫, ০৯:৫৯

গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীদের সর্বশেষ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে হামাস

ঢাকা, ২৭ মে, ২০২৫ (বাসস): হামাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা গাজা যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া একটি নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যেখানে ১০ জন জিম্মিকে দুই দফায় মুক্তি ও ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে।

গাজা সিটি থেকে এএফপি জানায়, নতুন এই সম্ভাব্য চুক্তির খসড়া এমন সময়ে প্রকাশ পেল, যখন ইসরাইল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে তাদের আক্রমণ আরও জোরদার করেছে। এর আগে একাধিক দফা আলোচনা হলেও মার্চের মাঝামাঝিতে দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

হামাসের সূত্র এএফপিকে জানায়, ‘হামাস মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যা গোষ্ঠীটি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পেয়েছে।’

সূত্রটি আরও জানায়, ‘এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ১০ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতি দেওয়া হবে, এবং এই সময়ের মধ্যেই একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গ্যারান্টিসহ আলোচনা শুরু হবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আগের যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়নেও ভূমিকা রেখেছিলেন।

আলোচনার বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত আরেকজন ফিলিস্তিনি সূত্র এএফপিকে জানান, ‘নতুন প্রস্তাবে হামাসের কাছে থাকা ১০ জীবিত ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া, গাজা থেকে ইসরাইলের আংশিক প্রত্যাহার, এবং কিছু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির কথা বলা হয়েছে।’

সূত্রটি আরও জানায়, ‘গত কয়েকদিন ধরে মধ্যস্থতাকারীরা এই প্রস্তাব হাজির করেছেন।’

এই যুদ্ধবিরতির আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতার সক্রিয়ভাবে মধ্যস্থতা করে যাচ্ছে।

দ্বিতীয় সূত্রটি জানায়, ‘চুক্তি কার্যকর হওয়ার প্রথম সপ্তাহে পাঁচজন জীবিত ইসরাইলি জিম্মি মুক্তি পাবে এবং বাকি পাঁচজন ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতির শেষের দিকে মুক্তি পাবে।’

গত সপ্তাহে ইসরাইল ঘোষণা দেয়, তারা দোহায় চলমান আলোচনায় অংশ নেওয়া তাদের শীর্ষ পর্যায়ের গাজাবিষয়ক আলোচক দলকে ‘পরামর্শের জন্য’ ফিরিয়ে নিচ্ছে, যদিও কিছু নিম্নস্তরের সদস্য কাতারের রাজধানীতে থেকে যান।

সম্প্রতি ইসরাইল গাজায় তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করেছে, যার বর্ণনা তারা দিয়েছে ‘হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সম্প্রসারণ’ হিসেবে।

গত যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে পারস্পরিক মতবিরোধের কারণে, যার পর ১৮ মার্চ ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করে।

২ মার্চ ইসরাইল গাজায় সম্পূর্ণ মানবিক সহায়তা অবরোধ আরোপ করে, যার মাধ্যমে তারা হামাসের কাছ থেকে ছাড় আদায়ের চেষ্টা করছে বলে জানায়। তবে জাতিসংঘ সংস্থাগুলো সতর্ক করে জানায়, এতে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও ওষুধের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে।

গত সপ্তাহে ইসরাইল আংশিকভাবে অবরোধ শিথিল করেছে এবং কিছু ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তবে মানবিক সংস্থাগুলো আরও দ্রুত ও পর্যাপ্ত সরবরাহ প্রবেশের আহ্বান জানিয়েছে।