বাসস
  ১৭ মে ২০২৫, ১১:০০

ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত বন্দর ইসরাইলি হামলা, হুথি নেতৃত্বকে হুমকি নেতানিয়াহুর

ঢাকা, ১৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহরে হামলা চালানোর পর হুথি বিদ্রোহীদের নেতৃত্বকে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

ইয়েমেনের হোদেইদা থেকে এএফপি জানায়, গত কয়েক দিনে হুথিদের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে শুক্রবারের এ হামলা চালানো হয়।

হুথিদের আল-মাসিরাহ টেলিভিশন জানায়, লোহিত সাগরের বন্দর হোদেইদা এবং এর উত্তরের বন্দর সালীফে একাধিক বোমা হামলা চালানো হয়। হোদেইদা শহরে এএফপির এক সংবাদদাতা একাধিক প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন বলে জানান।

হুথি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এসব হামলায় অন্তত একজন নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছেন।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের ১৫টি যুদ্ধবিমান হুথি নিয়ন্ত্রিত লক্ষ্যবস্তুতে ৩০টিরও বেশি বোমা নিক্ষেপ করে। তারা দাবি করে, লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ব্যবহৃত এসব বন্দর অস্ত্র পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল।

ইসরাইলের দাবি, হামলার আগে ইয়েমেনি বেসামরিক নাগরিকদের সরে যেতে সতর্ক করা হয়েছিল।

হুথি প্রশাসন ইসরাইলের এ হামলাকে ‘কষ্টদায়ক জবাব’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছে বলে হুথি-নিয়ন্ত্রিত সাবা বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেন, 'আমরা চুপচাপ বসে থাকতে পারি না যখন হুথিরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা তাদের ওপর আরও বেশি আঘাত হানব, তাদের নেতৃত্ব ও হামলার সক্ষমতা ধ্বংস করব।'

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ আরও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন: 'হুথিরা যদি হামলা অব্যাহত রাখে, তবে গাজায় নিহত হামাস নেতা মুহাম্মদ দেইফ ও সিনওয়ারদের মতো পরিণতি হুথি নেতাদেরও হবে।'

'আমরা হুথি নেতা আবদুল মালেক আল-হুথিকেও খুঁজে বের করে নির্মূল করব।:

চলতি মাসের শুরুতে হুথিদের একটি ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের প্রধান টার্মিনালের পাশে আঘাত হানে, এতে কয়েকজন আহত হন। এর জবাবে ইসরাইল সানা বিমানবন্দর ও আশপাশের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালায়।

জাতিসংঘের ইয়েমেনবিষয়ক দূত হান্স গ্রান্ডবার্গ এই পাল্টাপাল্টি হামলাকে ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, 'এটি প্রমাণ করে ইয়েমেন কতটা আঞ্চলিক সংঘাতের ফাঁদে পড়েছে।'

এদিকে অর্থসংকটে জাতিসংঘ ইয়েমেনে তাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছে।

চলতি বছরের শুরুতে ১ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের সহায়তার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ২.৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা আহ্বান করেছিল। কিন্তু অনুদান কমে যাওয়ায় এখন নতুনভাবে ৮৮ লাখ মানুষের জন্য ১.৪ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্তেফানি ট্রেমব্লে জানান, 'যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি বড় অনুদানদাতা দেশের সহায়তা কমে যাওয়ায় জাতিসংঘ ও সহযোগী সংস্থাগুলো কর্মী ছাঁটাই ও কার্যক্রম সীমিত করতে বাধ্য হচ্ছে।'