শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ মে, ২০২৫ (বাসস): জাপানের মন্ত্রিপরিষদ দপ্তরের শুক্রবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ০.২ শতাংশ কমেছে। এটি এক বছরের মধ্যে জাপানের অর্থনীতির প্রথম ত্রৈমাসিক সংকোচন।
টোকিও থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপান দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতা কাটিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক থেকে রেহাই পেতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার প্রকাশিত এই প্রাথমিক জিডিপি’র পরিসংখ্যানটি বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসকেও ছাপিয়ে গেছে। তাদের আশঙ্কা ছিলো এটি শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পাবে। গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় এটি মন্থর। জাপানের অর্থনীতি শেষবারের মতো হ্রাস পেয়েছিল ২০২৪ সালের জানুয়ারি-মার্চ মাসে। তখন এটি শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল ।
এই সংকোচনের মূল কারণ ছিল রপ্তানির শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস এবং আমদানির ২ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি। এর ফলে সম্মিলিতভাবে জাপানের জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
বিএনপি পারিবাসের প্রধান অর্থনীতিবিদ রিউতারো কোনো বলেন, ‘ভবিষ্যৎ অর্থনীতির দিকনির্দেশনা এখনও অনিশ্চিত। তবে ট্রাম্পের শুল্কনীতি এই অনিশ্চয়তাকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সম্ভবত দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে অর্থনৈতিক মন্দার ধারা আরো দৃশ্যমান হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের অনিশ্চয়তাপূর্ণ নীতির প্রভাব কর্পোরেট ব্যয়, বিশেষ করে মূলধনি বিনিয়োগ ও যন্ত্রপাতির চাহিদা কমতে পারে। ’
ট্রাম্পের প্রশাসন বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ট্রেডিং পার্টনারদের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ইস্পাত ও গাড়ি আমদানিও। তবে জাপানের অর্থনৈতিক দুর্দশার পেছনে কেবল বাণিজ্য যুদ্ধ নয় বরং দেশীয় ও বৈদেশিক চাহিদার অভাবও দায়ী।
দাই-ইচি লাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ইয়োশিকি শিনকে বলেন, ‘দেশীয় অর্থনীতি কার্যত কোনো চালিকাশক্তি ছাড়াই চলছে।
যদিও ব্যাপকভাবে মন্দা প্রত্যাশিত নয়, তবে শুল্কজনিত চাপ পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করতে পারে।’
এই মাসের শুরুতে, জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বিওজে) প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করেছে। যা পূর্ববর্তী অনুমান ১.১ শতাংশ থেকে অনেক কম। একইসঙ্গে, সুদের হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বিওজে জানিয়েছে,‘ বাণিজ্য ও অন্যান্য নীতিগত পরিবর্তন বিদেশি অর্থনীতিকে মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে। এর প্রভাব দেশীয় কর্পোরেট মুনাফাতেও পড়বে। তবে সহনশীল আর্থিক পরিবেশ কিছুটা সহায়তা দিতে পারে। যার ফলে ভবিষ্যতে জাপানের প্রবৃদ্ধির হার আবারও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।