শিরোনাম
ঢাকা, ১২ মে, ২০২৫ (বাসস) : তুরস্কের বিরুদ্ধে চার দশকের বেশি সময় ধরে সশস্ত্র সংগ্রামের সমাপ্তি টেনে সোমবার অস্ত্র পরিত্যাগসহ নিজেদের সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)।
ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি জানায়, কিছুদিন আগে ইরাকের উত্তরে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আলোচিত এ সশস্ত্র গোষ্ঠীর কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এ কংগ্রেসের পরই এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা পিকেকে ‘বিলুপ্ত’ এবং সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, পিকেকে তার ঐতিহাসিক লক্ষ্য পূরণ করেছে এবং কুর্দি সমস্যাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, যেখানে এটি এখন গণতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।
১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে আবদুল্লাহ ওকালান পিকেকে প্রতিষ্ঠা করেন। কুর্দিদের জন্য একটি পৃথক ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮৪ সাল থেকে সশস্ত্র লড়াই শুরু করে সংগঠনটি। তারা তুরস্কের মাটিতে ধারাবাহিকভাবে রক্তক্ষয়ী হামলা চালায়। এতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এই পদক্ষেপকে অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পিকেকে'র গৃহীত সিদ্ধান্ত একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে আমাদের অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে। এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে অনেক কিছু করার আছে।
সিরিয়া ও ইরাকের শীর্ষ কর্মকর্তারা আঞ্চলিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও কুর্দি সমস্যা সমাধানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে এটিকে স্বাগত জানিয়েছে।
ওকালান ফেব্রুয়ারিতে ইমরালি কারাগার দ্বীপ থেকে একটি চিঠিতে তার যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণ এবং সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণার আহ্বান জানান। এ কারাগারে তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে বন্দি রয়েছেন। তিনি সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য পিকেকেকে একটি কংগ্রেস আয়োজন করতে বলেন। এরপরই সম্প্রতি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।
সিরিয়া ও ইরাক উভয় দেশেই পিকেকে যোদ্ধাদের উপস্থিতি রয়েছে। সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণার ফলে সেখানেও এর প্রভাব পড়বে।
সিরিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক আসাদ আল-শাইবানি বলেছেন, এটি কেবল তুরস্কের জন্য নয়, আমাদের সমগ্র অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট নেচিরভান বারজানি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য এই ঘোষণার প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, পিকেকে’র সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক পরিপক্কতা প্রদর্শন এবং তুরস্ক ও এ অঞ্চলে সহাবস্থানের সংলাপের পথ প্রশস্ত করেছে।