ঢাকা, ১০ মে, ২০২৫ (বাসস) : ইসরাইলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি শুক্রবার বলেছেন, গাজা উপত্যকায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন খাদ্য বিতরণে ইসরাইল সম্পৃক্ত থাকবে না। তবে এই পরিকল্পনায় ‘প্রয়োজনীয় সামরিক নিরাপত্তা’ প্রদান করবে ইসরাইল।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে গাজায় দুই মাসব্যাপী সাহায্যে অবরোধ আরোপ করা সত্ত্বেও, ইসরাইল জোর দিয়ে বলেছে গাজায় কোনও মানবিক সংকট নেই।

হাকাবি জেরুজালেমে সাংবাদিকদের বলেন, ইসরাইলিরা প্রয়োজনীয় সামরিক নিরাপত্তা প্রদানে সম্পৃক্ত থাকবে, কারণ এটি একটি যুদ্ধক্ষেত্র। তবে তারা খাদ্য বিতরণে, এমনকি গাজায় খাদ্য আনার ক্ষেত্রেও সম্পৃক্ত থাকবে না।

বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই উদ্যোগটি সাহায্য বিতরণের জন্য একটি নতুন ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। 

মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে। কারণ এটি জাতিসংঘ ও বিদ্যমান সাহায্য সংস্থাগুলোকে পাশে সরিয়ে রাখছে। 

গাজার বর্তমান মানবিক কাঠামোর সংস্কার করা হবে। 

হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাসেম নাইম পরিকল্পনাটির ‘সাহায্য সামরিকীকরণ’ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন।

হাকাবি জাতিসংঘ, ‘প্রতিটি এনজিও’ ও ‘প্রতিটি সরকার’কে এই উদ্যোগে অংশ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই পরিকল্পনাটিকে ‘খুব শীঘ্রই’ কার্যকর করা যেতে পারে। আমরা এই প্রক্রিয়ায় যোগদানের জন্য যারা উদ্বিগ্ন, তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 

তিনি সাহায্য কার্যক্রমের সময়সূচী বা জড়িত বেসরকারি ফাউন্ডেশন সম্পর্কে আর কোনও তথ্য দেননি।

তিনি সাহায্য অভিযানের জন্য কোনও সময়সূচী বা জড়িত বেসরকারী ফাউন্ডেশন সম্পর্কে আরও কোনও তথ্য প্রদান করেননি। 

হাকাবি বলেন, বেশ কয়েকজন অংশীদার ইতোমধ্যেই এই প্রচেষ্টার অংশ হতে সম্মত হয়েছেন। 

তিনি নাম প্রকাশ করেননি।

হামাসের সঙ্গে আলোচনায় অচলাবস্থার মধ্যে গত ২ মার্চ ইসরাইল গাজায় অবরোধ আরোপ করে এবং গত ১৮ মার্চ পুনরায় সামরিক হামলা শুরু করে। 

যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর হামলার ফলে সৃষ্ট যুদ্ধে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটে।

সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপি’র হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় ইসরাইলি পক্ষের ১ হাজার ২১৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। 

হামাস ২৫১ জনকে অপহরণ করেছে এবং এদের মধ্যে ৫৮ জন এখনো গাজায় আটক রয়েছে। 

ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করছে যে, এই অপহৃতদের মধ্যে ৩৪ জন নিহত হয়েছে। 

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে,  হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরাইল অভিযান শুরু করার পর থেকে, গাজায় অন্তত ৫২ হাজার ৭৮৭ প্রাণ হারিয়েছে।