শিরোনাম
ঢাকা, ৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : বুধবার সুদানের বৃহত্তম নৌঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বাহিনী । দেশটির যুদ্ধকালীন রাজধানীতে চতুর্থ দিনে হামলা চালিয়েছে আরএসএফ। সেনাবাহিনীর একটি সূত্র এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পোর্ট সুদান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রটি জানায়, তাদের (ড্রোন) বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের মুখোমুখি হয়েছিল’।
এএফপির একজন সংবাদদাতা বুধবার ভোরে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছেন। শহরের ঠিক উত্তরে অবস্থিত ফ্লেমিঙ্গো ঘাঁটির দিক থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে তিনি দেখেছেন বলে জানান।
গত ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। যাকে সরকার সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘প্রক্সি’ বা প্রতিনিধিত্ব বলে অভিহিত করেছে।
রোববার পর্যন্ত ড্রোন হামলা শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত লোহিত সাগরের উপকূলে অবস্থিত পোর্ট সুদান ছিল একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল। পোর্ট সুদানে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং জাতিসংঘের কার্যালয় ছিল। আরএসএফকে এ এলাকায় ড্রোন হামলার জন্য দায়ী করা হয়েছে।
মঙ্গলবার পোর্ট সুদান জুড়ে ড্রোন হামলা চালায় আরএসএফ। যার ফলে প্রধান বন্দর, শহরের প্রধান বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দেশটির শেষ কার্যকর আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রায় ৬শ’ কিলোমিটার দক্ষিণে, ইরিত্রিয়ার সীমান্তের কাছে পূর্বাঞ্চলীয় কাসালা শহরে ‘তিনটি ড্রোন বিমানবন্দর স্থাপনায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানিয়েছেন, তারা শহরের পশ্চিমে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। যা এই সপ্তাহেও বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ উচ্ছেদ হয়েছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম ক্ষুধা ও বাস্তুচ্যুতি সংকট তৈরি হয়েছে।
রাজধানী খার্তুমের উপকণ্ঠে তাদের নিকটতম পরিচিত অবস্থান থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দূরে পোর্ট সুদানে এই সপ্তাহে হামলার বিষয়ে আরএসএফ কোনও মন্তব্য করেনি।
পোর্ট সুদানে হামলা চালানোর জন্য আরএসএফ কর্তৃক ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে এবং উপসাগরীয় দেশটিকে ‘আগ্রাসী’ রাষ্ট্র ঘোষণা করার পর বুধবারের এই হামলার একদিন পর সুদান সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশটি।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ, মার্কিন রাজনীতিবিদ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন সত্ত্বেও সংযুক্ত আরব আমিরাত দীর্ঘদিন ধরে আরএসএফকে সমর্থন করার কথা অস্বীকার করে আসছে।
পোর্ট সুদানে হামলার ফলে সুদানে মানবিক সাহায্য বিতরণ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে ইতিমধ্যেই কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে এবং প্রায় আড়াই কোটি মানুষ ভয়াবহ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শিকার হচ্ছে।
দেশটিতে প্রায় সমস্ত সাহায্য বন্দর সুদান দিয়ে যায়। যা মঙ্গলবার জাতিসংঘ ‘মানবিক কার্যক্রমের জন্য একটি জীবনরেখা’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং ‘বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকটে আরো মানবিক দুর্ভোগ’ সম্পর্কে সতর্ক করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত মার্চ মাসে খার্তুমের প্রায় পুরো এলাকা হারানোর পর থেকে আরএসএফ ড্রোনের ওপর ক্রমবর্ধমানভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।