বাসস
  ০৭ মে ২০২৫, ১২:০২

এখন যুদ্ধবিরতি আলোচনার মানে নেই : হামাস

ঢাকা, ৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় ইসরাইলের চলমান অভিযানকে ‘ক্ষুধার যুদ্ধ’ ও ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে হামাস জানিয়ে দিয়েছে, যুদ্ধবিরতির আর কোনো আলোচনা তারা বিবেচনায় নিচ্ছে না। দলের শীর্ষ নেতা ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাসেম নাইম মঙ্গলবার বলেন, ‘গাজা উপত্যকায় যখন ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও নির্বিচার হত্যার অপরাধ চলছে, তখন নতুন কোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার কেনে মানে নেই।'

হামাসের এমন অবস্থান আসে ইসরাইলের ‘বিস্তৃত সামরিক পরিকল্পনা’র ঘোষণার ঠিক একদিন পর, যেখানে অধিকাংশ গাজাবাসীকে দক্ষিণে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অভিযানের উদ্দেশ্য হবে ‘‘গাজা দখল এবং ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নেওয়া।’’

গাজা সিটি থেকে এএফপি জানায়, ইতোমধ্যে গাজার প্রায় সব বাসিন্দা একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গত ২ মার্চ থেকে গাজা পুরোপুরি অবরুদ্ধ। তীব্র খাদ্য ও ওষুধ সংকটের মধ্যেই ১৮ মার্চ পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল। মঙ্গলবার ইসরাইলি হামলায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন শিশু।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইসরাইলের নতুন পরিকল্পনায় ‘অগণিত বেসামরিক মানুষের মৃত্যু অনিবার্য’ এবং এটি গাজাকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো এই পরিকল্পনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ এবং ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তবু আন্তর্জাতিক মহল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর চাপ দেখা যায়নি।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২,৪৫৯ জন। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা দিয়ে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখন পর্যন্ত প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ৫২,৫৬৭ জনের।

হামাসের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলের এই অভিযান ন্যায্যতার সব সীমা অতিক্রম করেছে। আর তাদের বক্তব্যে ‘নাকবা’র (১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনিদের গণবিচ্ছিন্নতা) স্মৃতি ফিরে আসছে।

এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ থামানোর জন্য আন্তর্জাতিক মহলের দৃশ্যমান কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় মানবিক বিপর্যয় আরও ঘনীভূত হবে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।