বাসস
  ০৭ মে ২০২৫, ১১:১০

গাজায় ইসরাইলের অভিযানের বিরোধিতা চীনের

ঢাকা, ৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সম্প্রসারিত সামরিক অভিযানের কড়া সমালোচনা করেছে চীন। সম্প্রতি ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ গাজার রাফায় ‘বেশিরভাগ’ জনগণকে স্থানচ্যুত করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে বেইজিং যুদ্ধবিরতি রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেছে—এমন পদক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘চীন ফিলিস্তিন-ইসরাইল পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা গাজায় ইসরাইলের চলমান সামরিক কার্যক্রমের বিরোধিতা করছি এবং আশা করি সব পক্ষ যুদ্ধবিরতির চুক্তি ধারাবাহিকভাবে ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করবে।’

চীনের অবস্থান: ধারাবাহিক নীতির প্রতিফলন

চীন বরাবরই ফিলিস্তিন ইস্যুতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ও মানবিক শান্তির ওপর জোর দিয়েছে।

গত বছর বেইজিং ফিলিস্তিনি বিভিন্ন দল ও হামাসের প্রতিনিধিদের মধ্যকার সংলাপ আয়োজন করে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজে। গাজায় ইসরাইলের অভিযানের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান কেবল কূটনৈতিক বিবৃতি নয়, বরং একটি ভূরাজনৈতিক বার্তাও বহন করে— তারা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া ভূমিকা চ্যালেঞ্জ করছে।

রাফা অভিযান: আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ইসরাইলের রাফা অভিযান নিয়ে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লীগও উদ্বেগ জানিয়েছে।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে— সেখানে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখের বেশি মানুষ আবারও গৃহহীন হতে পারেন, যা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত করবে।

এর মধ্যেই চীনের অবস্থানকে অনেকে দেখছেন বৈশ্বিক দক্ষিণের একতাবদ্ধ কণ্ঠস্বর হিসেবে।

চীনের স্বার্থ ও ভূরাজনৈতিক বার্তা

চীন মধ্যপ্রাচ্যে নিজের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে চায়—এমন বিশ্লেষণ নতুন নয়। ইরান-সৌদি পুনর্মিলন ঘটিয়ে তারা ইতোমধ্যে নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। গাজা ইস্যুতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া সেই ভূরাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ। এতে করে তারা মুসলিম বিশ্বের সমর্থন অর্জনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সমর্থনের বিপরীতে একটি বিকল্প অবস্থান তুলে ধরছে।

গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানের সমালোচনায় চীনের মুখপাত্রের বক্তব্য নিছক নীতিগত নয়, বরং তা বৈশ্বিক ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও প্রশ্ন তোলে। রাফায় সম্ভাব্য ‘গণস্থানচ্যুতি’ শুধু একটি মানবিক বিপর্যয় নয়, বরং তা চীন-ইসরাইল কূটনীতির নতুন বাঁকও নির্দেশ করতে পারে।