বাসস
  ০৬ মে ২০২৫, ১৬:৫৬

চেনাব নদীর প্রবাহ বদলানোর অভিযোগে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি

ঢাকা, ৬ মে, ২০২৫ (বাসস) : চেনাব নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পরিবর্তনের অভিযোগ এনে ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। দেশটির দাবি, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে নদীর পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে, যা ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি লঙ্ঘনের শামিল—যদিও ভারত সম্প্রতি এই চুক্তি ‘স্থগিত’ ঘোষণা করেছে।
,
পাকিস্তানের লাহোর থেকে এএফপি জানায়, চেনাব নদী ভারতের হিমাচল প্রদেশ থেকে উৎপন্ন হলেও সিন্ধু চুক্তি অনুযায়ী এটি পাকিস্তানের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত। তবে ভারত গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর চুক্তি থেকে কার্যত সরে দাঁড়ায়।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সেচমন্ত্রী কাজিম পীরজাদা জানান, ‘আমরা নদীতে এমন প্রবাহগত পরিবর্তন দেখেছি, যা স্বাভাবিক নয়। একদিন পানির প্রবাহ ছিল স্বাভাবিক, পরদিন তা অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়।’

পাকিস্তানের জনবহুল পাঞ্জাব প্রদেশ, যার ভৌগলিক অবস্থান ভারতের সীমান্তঘেঁষা, দেশের কৃষিভিত্তিক প্রধান অঞ্চল। কাজিম পীরজাদা সতর্ক করে বলেন, ‘যেসব এলাকায় বিকল্প পানির উৎস নেই, সেসব জায়গায় এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।’

পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ২৬ এপ্রিল ভারী পরিমাণে পানি ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক জিন্নাহ ইনস্টিটিউট। তাদের ভাষায়, এটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে যাতে পাকিস্তান সেসব পানি ব্যবহার করতে না পারে।

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, পাকিস্তানের পাঞ্জাবের উজানে অবস্থিত বাগলিহার বাঁধের স্লুইস স্পিলওয়ে গেট নামিয়ে দিয়ে পানি আটকে রাখা হয়েছে ‘স্বল্পমেয়াদি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে।

ইন্দাস চুক্তি অনুযায়ী, ভারত নদীগুলোর ওপর বাঁধ বা সেচ প্রকল্প নির্মাণ করতে পারলেও পানি অন্যদিকে প্রবাহিত করা বা ভাটির দিকে প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা নিষিদ্ধ।

এ বিষয়ে এখনো ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশনের সাবেক প্রধান কুশবিন্দর ভোরা দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ‘যেহেতু চুক্তি স্থগিত, তাই আমরা এখন কোনো প্রকল্পে ফ্লাশিং করতে পারি কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়াই।’

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, দীর্ঘমেয়াদে পানি পুরোপুরি বন্ধ রাখা সম্ভব নয়, তবে কখন কতক্ষণ পানি ছাড়া হবে, সেই সময়সূচি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ভারত বাস্তবিক প্রভাব ফেলতে পারে।

জিন্নাহ ইনস্টিটিউটের মতে, ‘পানির ছাড়ার সময়সূচিতে সামান্য পরিবর্তনও চাষের ক্যালেন্ডার ব্যাহত করতে পারে এবং ফলন কমিয়ে দিতে পারে।’