বাসস
  ০৫ মে ২০২৫, ২২:২৭

ফ্রান্সিসের ‘পোপমোবাইল’ গাজার শিশুদের জন্য ক্লিনিকে রুপান্তরিত হচ্ছে

ঢাকা, ৫ মে, ২০২৫ (বাসস) : ক্যাথলিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান কারিতাস সোমবার জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে পোপ ফ্রান্সিস তার ব্যবহৃত বিশেষ গাড়ি ‘পোপমোবাইল’ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক বানাতে দান করেছে গেছেন।

‘পোপমোবাইল’ বিশেষভাবে নকশা করা মিৎসুবিশির একটি মোটরযান। সামনে ও ওপরের অংশ ছাড়া পুরো গাড়িটি খোলামেলা। রাস্তায় বিপুল সংখ্যক জনতার সঙ্গে দেখা করার সময় এ গাড়িটি ব্যবহার করতেন পোপ ফ্রান্সিস।

ভ্যাটিকান সিটি থেকে এএফপি জানায়, গাড়িটি জেরুজালেমে কারিতাসের কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। ইসরাইল যখন মানবিক করিডোর চালু করবে, তখন এটা গাজায় পৌঁছবে।

‘পোপমোবাইল’ গাড়িটি ২০১৪ সালে বেথলেহেম সফরের সময় ব্যবহার করেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তখন থেকে এটা প্রদর্শনের জন্য রেখে দেওয়া হয়। এতে ধুলো ও মরিচা জমে যায়। এখন এটি ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক হিসাবে মেরামত ও সংস্কার করা হয়েছে।

কারিতাস সুইডেনের মহাসচিব পিটার ব্রুন বলেন, ‘এই গাড়ির মাধ্যমে আমরা এমন সব শিশুদের কাছে যেতে পারব, যাদের চিকিৎসাসেবা নেওয়ার সুযোগ নেই। যেসব শিশুরা আহত হয়েছে এবং অপুষ্টিতে ভুগছে, এই গাড়ির মাধ্যমে তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।’

গত  ২১ এপ্রিল  পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে মারা যান। ব্রুন জানিয়েছেন, সুইডেনের কার্ডিনাল অ্যান্ডারস আরবোরেলিয়াস পোপ ফ্রান্সিসকে তার মৃত্যুর আগে এই গাড়িটি ফিলিস্তিনি শিশুদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহারের অনুরোধ জানান।

গাড়িটিতে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের জন্য একটি ফ্রিজ থাকবে। এতে একজন চালক ও চিকিৎসকদের একটি দল থাকবে।

কারিতাস জেরুজালেমের মহাসচিব আন্তন আসফার বলেন, এই গাড়িটি বিপদাপন্ন মানুষের জন্য পোপের পবিত্র  ভালোবাসা, যত্ন ও আন্তরিকতার প্রতিনিধিত্ব করে, যা তিনি সংকটজুড়ে প্রকাশ করেছিলেন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপর ইসরাইলি বাহিনীর ক্রমবর্ধমান হামলায় গাজা ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়। চলতি বছর দুই মাস সামিয়িক যুদ্ধবিরতি বলবৎ ছিল। দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ ইসরাইল গাজায় ফের বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে। এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। সাহায্য সংস্থার প্রত্যাশিত মানবিক করিডোরটি কখন খোলা হবে, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি।

সোমবার ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের অনুমোদন দিয়েছে। এটিকে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ‘জয়’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, ১৮ মার্চ ইসরাইল পুনরায় হামলা শুরু করার পর থেকে অন্তত ২ হাজার ৪৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ফিলিস্তিনে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৫৩৫জনে।

সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি এএফপি’র হিসাব অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে হামাসের হামলায় ইসরাইলের এক হাজার ২১৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।