শিরোনাম
ঢাকা, ৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : সংঘাতপূর্ণ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআর কঙ্গো) থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। সৈন্যরা তানজানিয়ায় জড়ো হওয়া শুরু করেছে এবং এই মাসেই বেশিরভাগ সৈন্য দেশে ফিরে যাবে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেনারেল রুদজানি মাফওয়ান্যা।
জোহানেসবার্গ থেকে এএফপি জানায়, জেনারেল রুদজানি মাফওয়ান্যা বলেন, ২৯ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। সৈন্যরা ডিআর কঙ্গো থেকে সড়কপথে রুয়ান্ডা হয়ে তানজানিয়ায় প্রবেশ করছে। সেখান থেকে তারা মে মাসের শেষ নাগাদ সমুদ্র ও আকাশপথে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে আসবে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এম২৩ সশস্ত্র আন্দোলনের পুনরুত্থানের সময় এসব সৈন্যদের সাউথ আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি (এসএডিসি)’র আঞ্চলিক বাহিনী হিসেবে পূর্ব ডিআর কঙ্গোতে মোতায়েন করা হয়। এম২৩ এখন খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে।
মাফওয়ান্যা সাংবাদিকদের জানান, এসএডিসি শান্তিরক্ষা বাহিনীর ৫৭ জন সদস্য নিয়ে ১৩টি ট্রাক ইতোমধ্যে তানজানিয়ার একটি মাঠে জড়ো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে পরবর্তী দলটি সেখান থেকে প্রত্যাহারের করা হবে।
রুয়ান্ডা সমর্থিত কঙ্গোর সশস্ত্র গোষ্ঠীর আন্দোলন এম২৩ এর হামলায় গত জানুয়ারিতে শান্তিরক্ষা মিশনের ১৭ জন সৈন্য নিহত হন, যাদের যাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। এ ঘটনার পর এসএডিসি মার্চের মাঝামাঝি সময়ে তাদের শান্তিরক্ষা বাহিনীর মিশন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন থেকে তারা সেখানে আটকা পড়ে আছেন।
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর রেডক্রস জানায়, ৩০ এপ্রিল এম২৩ পূর্বাঞ্চলীয় ডিআরসি শহর বিদ্রোহীদের দখলে নেওয়ার পর গোমায় জাতিসংঘের ঘাঁটিতে কয়েক মাস ধরে আটকে থাকা শত শত ডিআরসি সৈন্য ও পুলিশকে আলাদাভাবে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়।
-কিছুই রেখে না যাওয়া -
মাফওয়ান্যা বলেন, এসএডিসি প্রতিরক্ষা প্রধানরা এম২৩’কে জানিয়েছে, তারা সৈন্য ও সরঞ্জামাদি নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করে নেবে। কোনো এসএডিসি সরঞ্জাম থাকবে না। ডিআর কঙ্গোতে একটি পিনও রেখে যাচ্ছে না।
কর্মকর্তারা এসএডিসি’র শান্তিরক্ষী বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা সম্পর্কে কিছু জানায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে সংখ্যাটা এক হাজার ৩শ হবে, যাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছেন।
জাতিসংঘের একটি পৃথক শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে ডিআর কঙ্গোতে দক্ষিণ আফ্রিকার আরও সৈন্য রয়েছে। জানুয়ারিতে এই অঞ্চলে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৪ জন সৈন্য নিহত হওয়ার পর সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান বাড়তে থাকে।
নিহত সৈন্যদের বেশিরভাগই এসএডিসি মিশনের ছিলেন। তবে অন্তত দুজন জাতিসংঘের বাহিনীতে ছিলেন। এসএডিসি মোতায়েনে থাকা তিনজন মালাবিয়ান সেনাও নিহত হয়েছে। অন্যদিকে তানজানিয়া জানিয়েছে, তাদের দুই সৈন্য সংঘর্ষে মারা গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আফ্রিকার বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা গত সপ্তাহে কাতারে কঙ্গো ও রুয়ান্ডার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার পর এই সৈন্য প্রত্যাহারের তৎপরতা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে সংকট নিরসনের একটি প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ও যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এম২৩ রুয়ান্ডার কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পেয়েছে। তবে রুয়ান্ডা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।