শিরোনাম
ঢাকা, ২ মে, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে’ পৌঁছেছে বলে শুক্রবার সতর্ক করে দিয়েছে রেডক্রস। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইল দুই মাস ধরে সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
জেনেভা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায় ।
রেডক্রস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘অবিলম্বে গাজায় পুনরায় সহায়তা প্রবেশের সুযোগ না দিলে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) গাজায় তাদের খাদ্য,ওষুধ ও জীবনরক্ষাকারী সামগ্রী সরবরাহের মতো কর্মসূচি চালু রাখতে পারবে না।
ইসরাইল গাজা উপত্যকায় ২৪ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। গত ২ মার্চ গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এর কয়েক দিন পর দুই মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় হামলা চালায় ইসরাইল।
ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে গাজায় আবারও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় জাতিসংঘ বারবার মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করে আসছে।
আইসিআরসি’র অপারেশন বিভাগের উপ-পরিচালক প্যাসকেল হান্ডট শুক্রবারের এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকরা যুদ্ধের বিপদ থেকে বাঁচতে প্রতিনিয়ত ভিটা ছেড়ে পালাচ্ছে এবং জরুরি মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরিণতি সহ্য করছে। এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে দেওয়া উচিত নয় এবং এটা হতে দেওয়া যাবে না।
আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের কথা উল্লেখ করে আইসিআরসি জোর দিয়ে বলেছে, ইসরাইল তার নিয়ন্ত্রণাধীন সকল বেসামরিক জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে বাধ্য। এজন্য সকল সম্ভাব্য উপায় ব্যবহার করার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। যদি মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা অব্যাহত থাকে, তাহলে আইসিআরসি প্রতিদিন একবেলা আহার কার্যক্রম মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরিচালিত করতে পারবে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এক সপ্তাহ আগে বলেছিল, তারা তাদের ‘ মজুদকৃত অবশিষ্ট খাদ্য’ রান্নাঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে।
আইসিআরসি সতর্ক করে দিয়েছে, গাজায় তাদের পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালেও খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর অনেক অভাব দেখা দিয়েছে। কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ভোগ্যপণ্য ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
সংস্থাটি বলেছে, পানির পাইপলাইন বন্ধ করে দেওয়া এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এতে পানিবাহিত রোগের উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।
আইসিআরসি গত মাসে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আটজনসহ মোট ১৫ জন মানবিক সহায়তাকর্মী এবং চিকিৎসাকর্মীর হত্যাকাণ্ড এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহে হাসপাতালগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরে বলেছে, এটি গাজার ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরও পঙ্গু করে দিয়েছে।
আইসিআরসি বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনে স্পষ্ট করে বলা আছে, চিকিৎসাকর্মী এবং সুযোগ সুবিধাগুলোকে সকল পরিস্থিতিতে সম্মান এবং সুরক্ষা দিতে হবে। সুতরাং গাজায় সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে হবে। তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না নিলে, গাজা আরও বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে যাবে। ফলে মানবিক কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।