শিরোনাম
ঢাকা, ২ মে, ২০২৫ (বাসস): অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে প্রথম প্রান্তিকের রাজস্ব ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাব্য প্রভাব বিনিয়োগকারীদের বিচলিত করায় এর পূর্বাভাস প্রত্যাশার চেয়ে কম হয়েছে।
সান ফ্রান্সিসকো থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
অনলাইন খুচরা বিক্রেতার সংস্থা অ্যামাজন জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ের মধ্যে বিক্রয় ১৫৫.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। তবে ওয়াল স্ট্রিটে ট্রেডিং আওয়ার শেষ হওয়ার পর তাদের শেয়ারের দাম চার শতাংশেরও বেশি কমেছে।
কারণ, অ্যামাজনের সফল ব্যবসা অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডাব্লিউএস) এর বিক্রি ১৭ শতাংশ বেড়ে ২৯.৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালেও এটি বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়ে সামান্য কম ছিল।
অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি জ্যাসি বলেছেন, নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সেবা ও উন্নত গ্রাহক অভিজ্ঞতা নিয়ে তারা ২০২৫ সালের শুরুতে সন্তুষ্ট। প্রতিষ্ঠানটি এআই ও স্যাটেলাইট প্রকল্পে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ভবিষ্যতের আয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের চীনের পণ্যে নতুন ট্যারিফ অ্যামাজনের খরচ বাড়াতে পারে। যদিও ইলেকট্রনিকসসহ কিছু পণ্য আপাতত ছাড় পেয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই প্রান্তিকে তারা একাধিক এআই প্রকল্প চালু করেছে। এরমধ্যে রয়েছে অ্যামাজন নোভা জেনারেটিভ এআই মডেল এবং ইলন মাস্কের স্টারলিংকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তাদের প্রজেক্ট কুইপার স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ।
ভবিষ্যতের জন্য অ্যামাজন পূর্বাভাস দিয়েছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের নিট বিক্রি ১৫৯ বিলিয়ন থেকে ১৬৪ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে হবে, যা ৭ থেকে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে তা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার নিচে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই পূর্বাভাস বিনিয়োগকারীদের জন্য স্পর্শকাতর কারণ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন ঘোষিত উচ্চ ট্যারিফগুলোর প্রভাব অ্যামাজনের ব্যবসার ওপর কীভাবে পড়বে, তা নিয়ে জল্পনাুকল্পনা রয়েছে।
ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যদিও আপাতত ইলেকট্রনিকসসহ কিছু পণ্য এই তালিকার বাইরে রয়েছে।
এছাড়াও, শুল্ক ভোক্তাদের ব্যয় কমিয়ে দেবে কি-না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। কারণ, বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।
জ্যাসি বলেছেন, ‘ট্রাম্প এক মাস আগে ট্যারিফ ঘোষণা করার পর এখনো আমরা চাহিদা কমার কোনো লক্ষণ দেখিনি বরং মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কায় কিছু বিভাগে আগাম কেনাকাটা বেড়েছে।’
তবে তিনি জানান, অ্যামাজনে বেশিরভাগ বিক্রেতা এখন পর্যন্ত দাম বাড়ায়নি। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যে অ্যামাজন চীনের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল নয়।
এই সপ্তাহের শুরুতে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অ্যামাজন তাদের প্ল্যাটফর্মে গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক খরচ প্রদর্শন করতে চায়, এতে হোয়াইট হাউস থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। অ্যামাজনের নির্বাহী চেয়ারম্যান জেফ বেজোস ট্রাম্পকে ফোন করে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং কোম্পানি জানিয়ে দেয়, তারা এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে না।
এদিকে, সাধারণত গুগল ও মেটার দখলে থাকা বিজ্ঞাপন খাত ছিল এই প্রান্তিকে উজ্জ্বল দিক, যেখানে বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।