শিরোনাম
ঢাকা, ২ মে, ২০২৫ (বাসস): মার্কিন শুল্কনীতি অ্যাপলের জন্য ক্ষতিকর এবং তাদের সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী টিম কুক। অবশ্য প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মুনাফা অর্জনের কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি।
সান ফ্রান্সিসকো থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ‘বছরের শুরুতে প্রভাব সীমিত থাকলেও আমরা আশা করছি বর্তমান প্রান্তিকে মার্কিন ট্যারিফ আমাদের ৯০ কোটি মার্কিন ডলার অতিরিক্ত খরচ করাবে।
তিনি আরো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনগুলোর বেশিরভাগই ভারতে উৎপাদিত হওয়ায় অ্যাপলের পণ্যগুলো আপাতত ট্রাম্প প্রশাসনের পাল্টা শুল্ক থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।
তিনি আরো বলেছেন, আমরা শুল্কের প্রভাব সঠিকভাবে অনুমান করতে পারছি না, কারণ প্রথম প্রান্তিক শেষ হওয়ার আগে সম্ভাব্য ভবিষ্যতের পদক্ষেপ সম্পর্কে আমরা অনিশ্চিত।
কুক আরো বলেছেন, ধরে নিচ্ছি বর্তমান বিশ্বব্যাপী শুল্ক হার, নীতি এবং প্রয়োগ এই প্রান্তিকের অবশিষ্ট সময়ে অপরিবর্তিত থাকবে এবং নতুন কোনো শুল্ক আরোপ হবে না, তাহলে এর প্রভাবে আমাদের ৯০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ বাড়াবে।
উচ্চ প্রযুক্তির পণ্য যেমন স্মার্টফোন, সেমিকন্ডাক্টর এবং কম্পিউটার বর্তমানে সাময়িকভাবে শুল্ক থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।
তবে স্বাধীন প্রযুক্তি বিশ্লেষক রব এন্ডারলে বলেছেন, বর্তমানে আইফোনের সম্পূর্ণ সেট অব্যাহতিপ্রাপ্ত হলেও, সব উপাদান শুল্ক মুক্ত নয়। ‘যত বেশি উপাদান সীমা অতিক্রম করে হয়, তত বেশি খরচ পণ্যে প্রতিফলিত হয়।’
কানালিসের গবেষণা ব্যবস্থাপক লে জুয়ান চিউ বলেছেন, শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই অ্যাপল আগেভাগেই তাদের পণ্যের মজুদ তৈরি করেছিল। পাল্টা শুল্ক নীতিতে চলমান ওঠানামার সাথে সাথে ভবিষ্যতের ঝুঁকি কমাতে অ্যাপল সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন আরো ভারতে স্থানান্তর করবে। যদিও চীনে উৎপাদিত আইফোন এখনো অধিকাংশ মার্কিন চালানের উৎস। তবে প্রথম প্রান্তিকের শেষ দিকে ভারতে উৎপাদন দ্রুত বেড়েছে।
কুক আরো বলেছেন, ‘কিছুদিন আগে আমরা যা শিখেছি তা হল যে সবকিছু এক জায়গায় রাখার ফলে অনেক ঝুঁকি রয়েছে এবং তাই সময়ের সাথে সাথে সরবরাহ লাইনের কিছু বিকল্প উৎস গড়ে তুলেছি এবং ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’ চীনে বিক্রয় হ্রাস-প্রথম প্রান্তিকে অ্যাপলের রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৯৫.৪ বিলিয়ন ডলার, যার বেশিরভাগই আইফোন বিক্রি থেকে এসেছে এবং মুনাফা হয়েছে ২৪.৮ বিলিয়ন ডলার।
‘সিএআরএ’ রিসার্চের বিশ্লেষক অ্যাঞ্জেলো জিনো বলেছেন, ‘আমেরিকা এবং জাপানে অ্যাপল শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখেছে, এর একটি কারণ হতে পারে শুল্কের আগে বেশি অর্ডার দেওয়া।
‘চীনে রাজস্ব ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যদিও অঞ্চলটিতে চাহিদা বাড়াতে ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে।’
মার্কেট লেনদেন শেষে দেখা গেছে অ্যাপলের শেয়ার তিন শতাংশের বেশি কমে যায়।
ইমার্কেট বিশ্লেষক জেকব বোর্ন বলেছেন, ‘আসল বিষয় হলো, এই নজিরবিহীন বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় টিম কুক কী পরিকল্পনা নিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘ভারতে উৎপাদন স্থানান্তরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময়সীমা, উৎপাদন সক্ষমতা, এবং ব্যয়বৃদ্ধির ফলে লাভের আকার সংকুচিত হওয়া বা মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তার ওপর প্রভাব পড়া-এই সবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।’