শিরোনাম
ঢাকা, ২ মে, ২০২৫ (বাসস): স্পেনের পুলিশ বুধবার জানিয়েছে, তারা এক জার্মান দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের বিরুদ্ধে তাদের ছোট তিন সন্তানকে দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি অস্বাস্থ্যকর ঘরে বন্দি রাখার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ঘরটিকে ‘ভীতিকর বাড়ি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আস্তুরিয়াস অঞ্চলের পুলিশের বরাতে মাদ্রিদ থেকে এএফপি জানায়, আট বছর বয়সী যমজ দুই সন্তান ও ১০ বছর বয়সী আরেকটি শিশুকে স্কুলে পাঠানো হয়নি, তারা অবহেলিত অবস্থায় আবর্জনার মধ্যে বসবাস করছিল।
এই মাসের শুরুতে এক প্রতিবেশীর অভিযোগের পর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বাড়িটি যার নামে নিবন্ধিত শুধু তিনিই নন, আরও অনেকে সেখানে বাস করছেন—তাদের মধ্যে স্কুলে না যাওয়া শিশুরাও ছিল।
একটি বড় সূত্র ছিল, বাড়িটিতে বিপুল পরিমাণে অনলাইন বাজার সদাই পৌঁছানো। প্রতিবেশীরা জানান, ২০২১ সালের অক্টোবর—করোনা মহামারির সময় থেকে কেউই বাড়িটি ত্যাগ করেনি।
'করোনা-পরবর্তী ‘সিনড্রোমে’ আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত হয়েছিলাম... এই পরিবার দীর্ঘ সময় ঘরবন্দি থাকার সিদ্ধান্ত কেনো নিয়েছিল, তা আন্দাজ করা যায়,' বলেন পুলিশ কমিশনার ফ্রান্সিসকো হাভিয়ের লোজানো গার্সিয়া।
পুলিশ আরও জানায়, দম্পতির ঘরে বিপুল পরিমাণ ওষুধ মজুত ছিল।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ, পুলিশ যখন ঘরে ঢোকে, তখন শিশুরা ডায়াপার পরা ছিল এবং প্রত্যেকে মুখে তিনটি করে সার্জিক্যাল মাস্ক পরে ছিল। শিশুর বাবা পুলিশকে ঘরে ঢোকার আগে মাস্ক পরার অনুরোধ করেন।
'তারা মাস্ক পরেছিল—এটি হয়তো নিছক ঘটনাচক্র, আবার এর পেছনে কোনো মানসিক ভিত্তিও থাকতে পারে,' বলেন কমিশনার লোজানো গার্সিয়া।
লা রাসন পত্রিকার মতে, ঘরের অভ্যন্তরে গন্ধ ছিল অসহনীয় এবং সব জানালার পর্দা টানা ছিল। শিশুরা যখন প্রথমবার ঘর থেকে বের হয়, তারা ঘাস স্পর্শ করে ‘মুগ্ধতার’ সঙ্গে, যেন জীবনে প্রথমবার বাইরের পরিবেশে এসেছে।
এক চিকিৎসক তিন ভাইবোনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন, এরপর তাদের একটি শিশুসুরক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
সোমবার ওভিয়েদো শহরে দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হবে তারা কীভাবে এবং কেন স্পেনে এসে এমন জীবনযাপন শুরু করেছিলেন।