বাসস
  ০১ মে ২০২৫, ১৮:২২

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত: প্রসিকিউটররা

ঢাকা, ১ মে, ২০২৫ (বাসস): দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সক ইয়লকে বৃহস্পতিবার ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সামরিক আইন জারির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে নতুন এই অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউটররা। এর ফলে অভিশংসিত এই সাবেক প্রেসিডেন্টের আইনি ঝুঁকি আরও বেড়ে গেল। তবে তাকে আটক করা হয়নি।

সিওল থেকে এএফপি জানায়, ডিসেম্বর ৩ তারিখে সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে ইউন গণতান্ত্রিক দক্ষিণ কোরিয়ায় বেসামরিক শাসন স্থগিতের চেষ্টা করেছিলেন। সেই ঘটনায় ‘বিদ্রোহ পরিচালনার’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বিচার চলছে।

সেই সময় ইউনের জারিকৃত ডিক্রির ভিত্তিতে সংসদে সশস্ত্র সেনা মোতায়েন করা হয়। তবে সেই আদেশ প্রায় ছয় ঘণ্টার মধ্যেই বাতিল হয়ে যায়, কারণ বিরোধী সংসদ সদস্যরা দেয়াল টপকে সংসদে প্রবেশ করে তা বাতিল করেন। পরবর্তীতে তারা ইউনকে সামরিক আইন জারির কারণে অভিশংসিত করেন।

৬৪ বছর বয়সী ইউনকে গত এপ্রিল মাসে সাংবিধানিক আদালত অভিশংসন সিদ্ধান্ত বহাল রেখে তার সকল ক্ষমতা ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে। এরপরই তাকে প্রেসিডেন্সিয়াল আবাসন ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।

প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে — ইউন তখনও প্রেসিডেন্ট ছিলেন — তাকে ‘বিদ্রোহের মূল হোতা’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। এই অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের দায়মুক্তি কার্যকর ছিল না।

প্রসিকিউটরদের বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আমরা বিদ্রোহ মামলার বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তার ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়ে অতিরিক্ত তদন্ত করেছি, যার ফলস্বরূপ এই নতুন অভিযোগ আনা হয়েছে।'

নতুন এই অভিযোগ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইউনের স্ত্রী কিম কন হি এবং এক ‘শামান’-এর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের তদন্তে সিওলে ইউনের ব্যক্তিগত বাসভবনে অভিযান চালিয়েছেন তদন্তকারীরা। ওই শামান সাবেক ফার্স্ট লেডির পক্ষ থেকে বিলাসবহুল উপহার গ্রহণ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠছে।

যদি ইউন বিদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৯৯৭ সাল থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর একটি অনানুষ্ঠানিক স্থগিতাদেশ আছে।

ইউন হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট যিনি পদচ্যুত হয়েছেন এবং তৃতীয় যাকে পার্লামেন্ট অভিশংসন করেছে।

ইউনের বিদায়ের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় আগামী ৩ জুন একটি আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।