শিরোনাম
ঢাকা, ১ মে, ২০২৫ (বাসস) : দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রধান প্রার্থী লি জে-মিয়ংয়ের বিরুদ্ধে এক মামলায় আগের খালাসের রায় বাতিল করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচনি আইনে মিথ্যা বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে দেওয়া এই রায় নতুন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে আদালত, যা লির প্রার্থিতার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যেতে পারে এবং তিনি জরিমানা বা কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন।
সিওল থেকে এএফপি জানায়, আগামী ৩ জুন অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনের মাধ্যমে অভিশংসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়েলের স্থলাভিষিক্ত হবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। ইউন বিতর্কিতভাবে মার্শাল ল ঘোষণার পর জাতীয় সমালোচনার মুখে অভিশংসিত হন এবং পদচ্যুত হন।
এর আগে, ২০২২ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার সময় লি জে-মিয়ং যেসব বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেগুলোকে সুপ্রিম কোর্ট ‘গুরুত্বপূর্ণ মিথ্যা তথ্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছে—যা ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে পারে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আদালত জানায়, 'একজন জনপ্রতিনিধি প্রার্থী সাধারণ নাগরিকের মতো মুক্তভাবে মতপ্রকাশের অধিকার ভোগ করতে পারেন না, বিশেষ করে যখন বিষয়টি নির্বাচনী যোগ্যতার মতো গুরুতর প্রশ্নে প্রভাব ফেলে।'
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, খালাসের পূর্ববর্তী রায় ‘আইনি বিভ্রান্তি’র ফল ছিল। এখন নিম্ন আদালতে নতুন করে বিচার হবে। এতে যদি লিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তবে তিনি আগামী পাঁচ বছর কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সেইসঙ্গে এক মিলিয়ন ওয়নের (প্রায় ৭০০ মার্কিন ডলার) বেশি জরিমানা বা কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন।
সময় আদৌ যথেষ্ট?
গ্যালাপ কোরিয়ার সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ৬০ বছর বয়সী লি জে-মিয়ং প্রায় ৩৮ শতাংশ জনসমর্থন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছেন। অন্য সব প্রার্থী একক অঙ্কের সমর্থনে আটকে আছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তাকে বড় ধাক্কা দিলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে নতুন করে রায় দেওয়া আদালতের জন্য কঠিন হবে।
আইনজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইউ জুং-হুন বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিচারের জন্য ফেরত পাঠানোর পর নিম্ন আদালত সাধারণত তিন মাস সময় নেয়। নির্বাচনের আগে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।'
তাছাড়া, রায় নেতিবাচক হলেও লি আপিল করতে পারবেন—যা তার জন্য সময়ের সুযোগ তৈরি করবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের মামলার পাশাপাশি লির বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বিচার চলমান রয়েছে। তবে তিনি যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে সংবিধান অনুযায়ী এসব বিচার প্রক্রিয়া তার মেয়াদকালে স্থগিত থাকবে এবং মেয়াদ শেষে আবার চালু হবে।
অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ও সম্ভাব্য প্রার্থিতা ঘোষণা
এদিকে, দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন এবং এক সম্ভাব্য প্রার্থিতা ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিদায়ী ভাষণে ৭৫ বছর বয়সী হান বলেন, 'আমার সামনে দুটি পথ খোলা—একটি হলো দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাওয়া, আরেকটি হলো পদত্যাগ করে আরও বড় দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হওয়া।'
ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন।