শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানিতে জারি করা শুল্কের বিপরীতে কিছুটা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্দেশ্যে এক ঘোষণা স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ওয়াশিংটন থেকে সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি ও সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এই সুবিধা পাবে। গাড়ি শিল্পের বিভিন্ন মহল থেকে শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে যে সমালোচনা উঠেছে, এই পদক্ষেপ তারই প্রতিফলন।
এর আগে ঘোষণা অনুযায়ী, আমদানি করা গাড়িতে ২৫ শতাংশ শুল্ক ৩ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। যন্ত্রাংশে একই হারে শুল্ক কার্যকর হবে ৩ মে থেকে।
নতুন ঘোষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজিত যানবাহনের ক্ষেত্রে যেসব যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হবে, তার ওপর ৩.৭৫ শতাংশ মূল্যছাড় দেওয়া হবে, যা গাড়ির সম্ভাব্য খুচরা মূল্য (এমএসআরপি)-এর ভিত্তিতে হিসাব করা হবে। পরের বছর এ ছাড় হবে ২.৫ শতাংশ। এর মানে প্রথম বছরে যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজিত যানবাহনের মোট মূল্যের ১৫ শতাংশ এবং পরের বছরে ১০ শতাংশ শুল্ক থেকে অব্যাহতি পাবে।
হোয়াইট হাউসের তথ্যমতে, ‘এই ঘোষণা গাড়ি ও যন্ত্রাংশে শুল্কনীতিতে পরিবর্তন এনে নির্মাতাদের যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজন করতে উৎসাহিত করবে এবং বিদেশি আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাবে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আমেরিকানরা ১ কোটি ৬০ লাখ গাড়ি কিনেছে, যার অর্ধেকই ছিল আমদানিকৃত। যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজিত ৮০ লাখ গাড়ির মধ্যে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ উপাদান ছিল দেশীয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একই গাড়ির যন্ত্রাংশ ও তার উপাদান (যেমন স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম)-এর ওপর একাধিকবার শুল্ক দিতে হবে না। অর্থাৎ, কোনো যন্ত্রাংশে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিলেই অতিরিক্ত উপাদানগুলোতে আর আলাদা করে শুল্ক আরোপ করা হবে না।
পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের জ্যেষ্ঠ গবেষক গ্যারি ক্লাইড হাফবাওয়ার বলেন, ‘এটা আবারও প্রমাণ করল যে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি এখন কার্যকর লবিংয়ের ফল মাত্র। এই ক্ষেত্রে গাড়ি শিল্পের চাপেই ছাড় দেওয়া হয়েছে।’
এপ্রিল ২১ তারিখে, দেশি ও আন্তর্জাতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি জোট ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে ইলেকট্রনিক পণ্যের মতোই শুল্ক ছাড় দাবি করে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘গাড়ির যন্ত্রাংশে শুল্ক বিশ্বব্যাপী গাড়ি সরবরাহ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। এতে ভোক্তাদের জন্য গাড়ির দাম বাড়বে, বিক্রি কমবে, এমনকি মেরামতের খরচও বাড়বে ও অনিশ্চিত হয়ে উঠবে।’
সিএনএন জানায়, ট্রাম্প একাধিক গাড়ি কোম্পানির সিইওদের ফোন কল পাওয়ার পরেই এ সিদ্ধান্ত নেন। বাণিজ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব সিইও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে ট্রাম্পের উচ্চ হারে শুল্ক তাদের উৎপাদন ও কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
হাফবাওয়ার বলেন, ‘এটা জনগণের সমালোচনা থেকে বাঁচারও একটি চেষ্টা, কারণ ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে গাড়ির দাম বাড়লে প্রশাসনকে এর জবাবদিহি করতে হতে পারে।’