শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যকে ‘চুক্তির খেলা ও অধিক ধ্বংসযজ্ঞের এক মঞ্চে’ পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন লেবাননের একজন বিশ্লেষক।
বৈরুত থেকে সিনহুয়া জানায়, লেবাননের সিল্ক রোড ইনস্টিটিউট ফর স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের প্রেসিডেন্ট ওয়ারেফ কুমাইহা বলেন, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মার্কিন নীতির এই নতুন ধারা স্বল্পমেয়াদি স্বার্থ, বেপরোয়া দরকষাকষি ও আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধকে হ্রাস করার বিপজ্জনক প্রবণতার প্রকাশ।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্র নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে এসেছে। তবে বর্তমান প্রশাসন আরও একধাপ এগিয়ে বসতি সম্প্রসারণকে অনুমোদন দিয়েছে, জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নিয়েছে এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী জাতিসংঘ সংস্থাগুলোকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে।
এই পদক্ষেপগুলো ইসরাইলকে আগ্রাসনে আরও উৎসাহী করেছে বলে কুমাইহা মন্তব্য করেন। এর ফলেই গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
লেবাননের পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন কুমাইহা। তিনি জানান, সীমান্তবর্তী গ্রাম থেকে শুরু করে রাজধানী বেইরুত পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনা অভিযানের বিস্তৃতি ঘটেছে, এতে শত শত মানুষ হতাহত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আত্মসংযমের আহ্বান জানানোর বদলে যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোকেই দোষারোপ করেছে এবং আত্মরক্ষার অজুহাতে ইসরায়েলকে পুরোপুরি খোলা ছাড় দিয়েছে।’ এর ফলে লাখেরও বেশি লেবাননি নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখা দিয়েছে।
কুমাইহার মতে, মার্কিন প্রশাসন উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ককেও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে এবং প্রকৃত অংশীদারত্বের বদলে চাপ প্রয়োগের কৌশল গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘মার্কিন অর্থনীতিতে উপসাগরীয় বিশাল বিনিয়োগ প্রকৃত সহযোগিতার নয়, বরং রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা চাপ এড়ানোর কৌশলমাত্র।’
ইরান প্রসঙ্গে কুমাইহা বলেন, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসে সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সিদ্ধান্ত গোটা অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি মন্তব্য করেন, ‘কোনো কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের পরিবর্তে এই ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি অঞ্চলকে বড় ধরনের সংঘাত ও অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়েও ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেন কুমাইহা। তিনি বলেন, তারা সরাসরি যুদ্ধের যুক্তিকে উৎসাহিত করেছে এবং লোহিত সাগরসহ আঞ্চলিক সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
তিনি উপসংহারে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য বিনিয়োগের ফাঁকা প্রতিশ্রুতি নয়, বরং এমন নীতির দাবি রাখে যা ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও জনগণের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।’