শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল. ২০২৫ (বাসস) : পরিবেশ রক্ষায় কাজ করায় কারাবন্দি পাঁচজন পরিবেশবাদীর জামিন আবেদন বাতিল করেছে ক্যাম্বোডিয়ার সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার এই আদেশের কথা জানান এক বন্দির স্ত্রী। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো যাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করেছে।
নম পেন থেকে এএফপি জানায়, ‘মাদার ন্যাচার’ নামে পরিবেশবাদী সংগঠনের এই পাঁচ কর্মী রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। গত বছর মোট ১০ জন পরিবেশকর্মীকে ৬ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যার মধ্যে এ পাঁচজনও রয়েছেন।
পরিবেশকর্মী থুন রাথার স্ত্রী পাত রাখস্মে (৩৪) এএফপিকে বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে আমি হতাশ। যারা প্রকৃতি রক্ষা করে, তাদের জেলে পুরে রাখা হয়েছে। অথচ যাঁরা প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করেছেন, তারা দিব্যি আনন্দে বেঁচে আছেন। এটি পাঁচজনের জন্য স্পষ্ট অন্যায়।’’
তিনি আরও বলেন, ‘তবু আমার স্বামী এখনো মানসিকভাবে দৃঢ় আছেন।’
গত বছরের জুলাইয়ে দণ্ডপ্রাপ্তদের বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হলেও পাঁচজনই আপিল করেছেন।
জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর ২০২৪ সালে এক বিবৃতিতে বলেছিল, এই দণ্ড ও রায় নিয়ে তারা ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। এই ঘটনায় ক্যাম্বোডিয়ায় পরিবেশবাদীদের প্রতি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের ধারাবাহিকতা প্রতিফলিত হচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ক্যাম্বোডিয়ায় গত এক দশকে একাধিক পরিবেশকর্মীকে হুমকি, গ্রেপ্তার এমনকি হত্যার শিকার হতে হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবৈধ কাঠ কাটা নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান সাংবাদিক চুয়েং চুয়েং।
পরিবেশকর্মীদের মতে, লাগামহীন অবৈধ কাঠ সংগ্রহের ফলে ক্যাম্বোডিয়ার বনভূমির পরিমাণ গত দুই দশকে ব্যাপকভাবে কমেছে। মনিটরিং সাইট গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের হিসাব অনুযায়ী, ২০০২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশটির এক-তৃতীয়াংশ আর্দ্র প্রাথমিক বন, যেগুলো পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের অন্যতম আধার ও কার্বন শোষণের বড় উৎস, ধ্বংস হয়ে গেছে।
এমন এক প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি সরকারি আদেশে দেখা গেছে, ক্যাম্বোডিয়ার সরকার একটি সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের গভীরে একটি সিমেন্ট কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে।