শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : মালিতে সামরিক বাহিনী ও রুশ ভাড়াটে বাহিনীর হাতে অসংখ্য সাধারণ নাগরিকের হত্যাকাণ্ড ও গুমের অভিযোগে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞগণ। তারা এসব ঘটনার দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন এবং এটিকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, গত সপ্তাহে মালির একটি সামরিক ক্যাম্পের কাছে গণকবর আবিষ্কারের পর জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের অধীনে কাজ করা ১৩ জন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনায় যারা সরাসরি যুক্ত বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
২০২০ ও ২০২১ সালে পরপর দুটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মালি সেনাশাসনের অধীনে রয়েছে। দেশটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের সহিংসতার মুখে রয়েছে। সাবেক উপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে মালি বর্তমানে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকেছে।
মালির সামরিক সরকার বলছে, তারা রুশ ‘সামরিক প্রশিক্ষক’দের সহায়তা নিচ্ছে। তবে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞসহ একাধিক সূত্রের দাবি, এসব প্রশিক্ষক মূলত রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের সদস্য।
বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা জানান, ১২ এপ্রিল মালির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সেবাবুগু শহরের একটি বাজার থেকে সেনাবাহিনী ও রুশ ভাড়াটে বাহিনীর সদস্যরা বহু পুরুষকে আটক করে কাওলা সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে যায়। পরে নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সেবাবুগু থেকে কমপক্ষে ৬৫ জন নিখোঁজ বা গুম হয়েছেন। একটি বিশ্বাসযোগ্য সূত্র ৫৪ জন পুরুষের নামের একটি তালিকাও বিশেষজ্ঞদের হাতে তুলে দিয়েছে।
তাঁরা বলেন, ‘এই ধরনের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়ীদের বিচার না হওয়ার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক আইনে সামরিক কমান্ডার ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাও তাদের অধীনস্থ বাহিনীর অপরাধের দায় এড়াতে পারেন না।’
জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের এই বিবৃতি মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সমাজের নজর ফেরানোর আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।