বাসস
  ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:২২

শিশুদের সুরক্ষায় নতুন প্রজন্মের নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন জরুরি: বিশেষজ্ঞদের অভিমত

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া প্রতিরোধে নতুন প্রজন্মের অধিক কার্যকর নিউমোকক্কাল কনজুগেট ভ্যাকসিন (পিসিভি) চালুর আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 

বৃহস্পতিবার আইসিডিডিআর,বি-তে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ২০১৫ সাল থেকে ইপিআই কর্মসূচির আওতায় ব্যবহৃত পিসিভি-১০ ভ্যাকসিন শিশুদের কিছু নির্দিষ্ট সেরোটাইপজনিত রোগ থেকে সুরক্ষা দিলেও সময়ের সাথে নিউমোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার ধরনে পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে নতুন সেরোটাইপের বিরুদ্ধে কার্যকর সুরক্ষার জন্য পরবর্তী প্রজন্মের ভ্যাকসিন চালু করা প্রয়োজন।

আইসিডিডিআর,বি ও আইইডিসিআর-এর যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, পিসিভি-১০ চালুর পর কিছু সেরোটাইপের প্রকোপ কমলেও নতুন সেরোটাইপের সংক্রমণ বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি-এর সহায়তায় পরিচালিত এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়, পিসিভি-১০ টিকাকে পিসিভি-১৩, পিসিভি-১৫ বা পিসিভি-২০ ভ্যাকসিনে উন্নীত করলে শিশুদের সুরক্ষা যথাক্রমে ১৭ শতাংশ, ১৯ শতাংশ ও ৫২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘নিউমোনিয়া এখনও শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ। তাই প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এখন জরুরি।’ 

বৈঠকের সভাপতি ও নাইট্যাগ চেয়ারম্যান ড. ফিরদৌসী কাদরী বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ ইতোমধ্যে উন্নত পিসিভি চালু করেছে, বাংলাদেশও এ উদ্যোগে অগ্রসর হওয়া উচিত।’

ইপিআই-এর সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. তাজুল ইসলাম এ বারী জানান, পিসিভি-১৩ ভ্যাকসিন অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী হতে পারে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. ফারহাদ হুসাইন বলেন, ‘ভ্যাকসিন হালনাগাদ করলে অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর নির্ভরতা কমবে। ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বলেছেন, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রমাণ স্পষ্ট-আমাদের দ্রুত নতুন প্রজন্মের ভ্যাকসিনে উন্নীত হতে হবে, যাতে শিশুদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।’

বিশেষজ্ঞরা সর্বসম্মতিক্রমে অভিমত দেন, প্রমাণভিত্তিক এই উদ্যোগ বাংলাদেশের সফল টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করে তুলবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।