বাসস
  ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:২৪
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:২৯

সম্ভাবনাময় ফুটবলার মেহেদী জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেন

জামালপুর, ১ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস) : কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে একজন সম্ভাবনাময় ফুটবলার হিসেবে প্রমান করেছেন জামালপুরের ১৭ বছর বয়সী মেহেদী হাসান।

বয়সভিত্তিক দলগুলোতে অংশ নিয়ে নিজের প্রতিভার জানান দেয়া এই তরুণের সামনে এগিয়ে যাবার জন্য এখন প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা ও আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কিছু ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ইতোমধ্যেই অর্জণ করেছেন মেহেদী। 

আর সেই ম্যাচগুলোতে নিজেকে প্রমান করতেও ভুল করনেনি। বয়সভিত্তিক দলের এই মিডফিল্ডারের এখন স্বপ্ন জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করার। 

জামালপুর সদর উপজেলার কইদোলা শাহবাজপুর গ্রামের মো: বাবুল হোসেন ও মোসা: মমতাজ বেগমের একমাত্র সন্তান মেহেদী। ছোটবেলা থেকেই দরীদ্র পরিবারের সন্তান হিসেবে জীবনে কঠিন সময় পার করেছেন। বাবা পেশায় একজন দর্জি। দরীদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও নিজের প্রতিভাব বিকাশ ঘটাতে দারীদ্রতা কখনই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি মেহেদীর কাছে। 

২০১৯ সালে জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুরে জামালপুর ফুটবল একাডেমি আয়োজিত একটি ট্রায়াল ম্যাচের মাধ্যমে সকলের নজড়ে আসে মেহেদীর খেলা। ঐ ম্যাচে মেহেদী সেরা খেলোয়াড় মনোনীত হন। ২০২১-২২ মৌসুমে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রহমতগঞ্জ ক্লাব ও ২০২৩-২৪ মৌসুমে আবাহনী লিমিটেডের অনূর্ধ্ব-১৮ দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন মেহেদী। 

২০২৪ সালে ভূটানে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টে তিনি প্রথমবারের মত বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন। ঐ আসরে পাকিস্তান, ভারত ও মালদ্বীপের বিপক্ষে তিনি নিজেকে প্রমান করেন। টুর্ণামেন্টের ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশ রানার্স-আপ হয়েছিল।

একই বছর এএফসি ফুটবল বাছাইপর্বে অংশ নিতে কম্বোডিয়া সফরে যান মেহেদী। এ আসরে আফগানিস্তান, ম্যাকাও, ফিলিপাইন ও স্বাগতিক কম্বোডিয়ার বিপক্ষে মেহেদী বাংলাদেশের হয়ে মূল একাদশে খেলেছেন। 

বাসস’র সাথে আলাপকালে মেহেদী হাসান জানান, তিনি বিকেএসপি থেকে এসএসসি সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে বিকেএসপিতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি।

তিনি আরো বলেন, ‘আমার বাবা-মা এখন আমার উপর নির্ভরশীল, কারণ আমার বাবা অসুস্থতার কারণে দর্জি পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। আমার কোন বুট না থাকার কারনে খালি পায়ে ফুটবল খেলা শুরু করি। এভাবেই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গেছি।’

আর্থিক সহায়তা এবং উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে ভবিষ্যতে নিজেকে একজন দেশসেরা ফুটবলার হিসেবে প্রমাণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মেহেদী। 

জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আফরিন আক্তার মনি বলেছেন, ‘মেহেদী অত্যন্ত দরীদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছে। তার মধ্যে অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে। সঠিক দিক নির্দেশনা, আর্থিক সহায়তা এবং উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে মেহেদী নিজেকে আরো পরিনত করে তুলতে পারবে।’