বাসস
  ২২ জুন ২০২৫, ১৯:০৭

জিজিয়া কর নিয়ে হিন্দু ব্যবসায়ীকে হত্যার দাবি ভিত্তিহীন : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

ঢাকা, ২২ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ‘জিজিয়া কর না দেওয়ায় হিন্দু ব্যবসায়ীকে ইসলামি জঙ্গিরা হত্যা করেছে’ এমন দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’-এ আজ এক পোস্টে বলা হয়, ‘সম্প্রতি একটি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে একজন হিন্দু ব্যবসায়ীকে জিজিয়া কর না দেওয়ায় ইসলামি উগ্রবাদীরা হত্যা করেছে।’

ঘটনাটি ২০২৩ সালে শেখ হাসিনার শাসনামলে ঘটলেও এখন এক্স (সাবেক টুইটার)-সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তা ছড়িয়ে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক নিপীড়নের অংশ হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এই দাবিতে বলা হয়, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় মোহাম্মদ ইমরান নামের এক মৌলবাদী ব্যক্তি বিকাশ চন্দ্র দাস নামের এক হিন্দু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৭০,০০০ টাকা জিজিয়া দাবি করেন এবং তা না দেওয়ায় তাকে হত্যা করেন।

প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই দাবিগুলো অতিরঞ্জিত ও চটকদার ভাষায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়নের একটি ভুয়া চিত্র উপস্থাপন করা যায়।’

কিন্তু দেশীয় গণমাধ্যম ও পুলিশের যাচাইকৃত তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় ধর্মীয় উগ্রবাদ বা জিজিয়া করের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি ছিল একটি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে উদ্ভূত সহিংসতা।

বিশ্বস্ত সূত্র যুগান্তর ও অন্যান্য মিডিয়া প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানায়, ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের ৬ জুন চান্দিনা উপজেলায়। একটি পিকআপ ভাড়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২৮ বছর বয়সী আজিজুল ইসলাম আজু বিকাশ চন্দ্র দাসের ওপর হামলা চালান। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দাস মারা যান।

পুলিশ ২০২৩ সালের ২৮ জুন আজুকে গ্রেফতার করে এবং তদন্তে নিশ্চিত হয় যে এটি ছিল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ঘটানো একটি খুন। ধর্মীয় ঘৃণা বা উগ্রবাদের সঙ্গে এর কোনো যোগ নেই।

বিবৃতিতে বলা হয় ‘এই ঘটনার সাথে ধর্মীয় বিদ্বেষ, উগ্রবাদ বা নিপীড়নের কোনো সম্পর্ক নেই। কীভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য সত্যকে বিকৃত করে এবং সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে এটি তার আরেকটি উদাহরণ।’