শিরোনাম
ঢাকা, ৬ জুন, ২০২৫ (বাসস) : জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের ইংরেজি ভাষায় দেওয়া বক্তব্যের ভুল অনুবাদ করে প্রকাশ করেছে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এমন তথ্য প্রকাশ করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) পরিচালিত ফ্যাক্ট-চেক ও মিডিয়া গবেষণা সংস্থা 'বাংলাফ্যাক্ট'।
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলে (ডিডাব্লিউ) গোয়েন লুইসের একটি বক্তব্য ভুল অনুবাদ করে প্রকাশ করেছে। যেটি দেখে বাংলাদেশ 'করিডর' প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিচ্ছে এবং জাতিসংঘ তাতে জড়িত নয়, এমন ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। অথচ গোয়েন লুইস স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আমি জানি না ‘করিডর’-এর প্রশ্ন কোত্থেকে এলো।’
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, গত ৪ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের এই শীর্ষ কর্মকর্তা। প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনজন সাংবাদিক ‘করিডর’ প্রসঙ্গে জানতে চান।
তাদের প্রশ্নের জবাবে গোয়েন লুইস বলেন, ‘হিউম্যানিটারিয়ান করিডর একটি আনুষ্ঠানিক ও আইনি বিষয়। এর জন্য সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি প্রয়োজন। বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং এতে সম্ভাব্য জড়িত অন্যান্য পক্ষের সম্মতি থাকলে জাতিসংঘ তা সমর্থন করতে পারে। তবে আমি যতদূর জানি, এ ধরনের কোনো চুক্তি এখনো হয়নি। জাতিসংঘ সবসময় আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা ও সংঘাতপীড়িত জনগোষ্ঠীর সহায়তায় নেওয়া উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। কিন্তু এখানে এখনো কোনো হিউম্যানিটারিয়ান করিডর প্রতিষ্ঠিত হয়নি এবং এর বিষয়ে জাতিসংঘ কোনো আলোচনাতেও অংশ নেয়নি।’
তার বক্তব্যের কোথাও ‘করিডর প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ কাজ করছে’ এমন তথ্য বা ইঙ্গিত ছিল না বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাফ্যাক্ট।
অতীত মন্তব্য বিশ্লেষণ করে বাংলাফ্যাক্ট আরো জানায়, গত ১৩ মার্চের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নে ‘করিডর’ শব্দটি ব্যবহার করা হলেও, জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ‘হিউম্যানিটারিয়ান প্যাসেজ’ ব্যবহার করেন।
পরে ৮ এপ্রিল হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ‘মানবিক সহায়তা’ নিয়ে কথা বলেন, করিডর প্রসঙ্গে নয়।
২৭ এপ্রিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘হিউম্যানিটারিয়ান প্যাসেজ’ শব্দ ব্যবহার করলেও ‘করিডর’ শব্দ উচ্চারণ করেননি।
২১ মে ড. খলিলুর রহমান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘করিডর নিয়ে আমাদের সঙ্গে কারোর কোনো কথা হয়নি এবং তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হবে না।’
বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান টিমের মন্তব্য, ‘এটি স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কখনো করিডর প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়নি। বরং ত্রাণ সহায়তা পাঠানো এবং সেজন্য ‘হিউম্যানিটারিয়ান প্যাসেজ’ ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে মাত্র।’
বাংলাফ্যাক্ট বলছে, ‘গোয়েন লুইস প্রেসক্লাবের আলোচনায় একপর্যায়ে বলেন, ‘আমি জানি না হিউম্যানিটারিয়ান করিডরের প্রশ্ন কোত্থেকে এলো।’
বাংলাদেশে চলমান গুজব, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও অপপ্রচার প্রতিরোধে এবং জনগণের কাছে যাচাই করা তথ্য পৌঁছে দিতে কাজ করছে বাংলাফ্যাক্ট।