বাসস
  ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৪:২৮

গোল্ডম্যান স্যাকস’র মুনাফায় উলম্ফন, মার্জার কার্যক্রম বাড়নোর ইঙ্গিত সিইও’র

ঢাক, ১৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস):  গোল্ডম্যান স্যাকস দ্বিতীয় প্রান্তিকে উল্লেখযোগ্যভাবে মুনাফা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, যার পেছনে রয়েছে আর্থিক পরামর্শ খাতে আয় বৃদ্ধির ভূমিকা। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ডেভিড সোলোমন জানিয়েছেন, এটি সম্ভবত বড় পরিসরে চুক্তি ও অধিগ্রহণ (এমএন্ডএ)  কার্যক্রম বৃদ্ধির ইঙ্গিত।

নিউ ইয়র্ক থেকে এএফপি জানায়, বিনিয়োগ ব্যাংকের আয় বিশ্লেষকদের অনুমানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পর সলোমন একটি কনফারেন্স কলে বিশ্লেষকদের বলেন, "কাল্পনিকভাবে, সংলাপের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।"
তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মার্জার নীতির প্রতি সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি সিইওদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে, যা বাইডেন প্রশাসনের তুলনায় ভিন্ন।

পরে সিএনবিসি-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, ডেভিড সোলোমন বলেন, "অর্থনীতিতে খানিকটা গতি ফিরে আসছে বলে মনে হচ্ছে," কারণ বাজারে মনোভাব কিছুটা উন্নত হয়েছে। যদিও এপ্রিলে তিনি ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব নিয়ে মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।

এই মন্তব্যগুলো আসে এমন এক সময়ে, যখন গোল্ডম্যান স্যাকস পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ মুনাফা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, যা দাঁড়িয়েছে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার। আয় হয়েছে ১৪.৬ বিলিয়ন ডলার, যা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, পরামর্শ ফি বৃদ্ধির প্রভাব বিশেষভাবে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলে বেশি লক্ষ করা গেছে।

এমএন্ডএ ও আইপিও সংক্রান্ত ব্যাকলগ (পিছিয়ে থাকা কার্যক্রম) বেড়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও চুক্তির সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

মার্কেট বিভাগে বিশেষ করে ইকুইটি ট্রেডিং থেকে গোল্ডম্যান অনেক বেশি আয় করেছেন।  যেখানে তারা ফাইন্যান্সিং ও মধ্যস্থতামূলক লেনদেন থেকে বড় রাজস্ব অর্জন করেছে। এই সাফল্য অ্যাসেট ও ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট খাতে রাজস্ব হ্রাসের প্রভাব অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে।

এই ফলাফল জেপি মরগান, সিটিগ্রুপসহ অন্যান্য বড় ব্যাংকের ভালো ফলাফলের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা ট্রাম্প প্রশাসনের নিয়ন্ত্রক শিথিলতার মধ্যে পুরো খাতের গতি বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এতে ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর প্রয়োজনীয় মূলধনের সীমাবদ্ধতা কিছুটা লাঘব হতে পারে।
 
শুল্কজনিত অনিশ্চয়তা : কনফারেন্স কলে ডেভিড সোলোমন বলেন, ‘বর্তমান অধিগ্রহণ বাজার অত্যন্ত স্থিতিশীল। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে কিছুটা ধীর গতি থাকার পরও এ বছর এখন পর্যন্ত চুক্তির পরিমাণ ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।

তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, এনআরজি -এর ১২ বিলিয়ন ডলারের লেনদেন (এলএস পাওয়ার থেকে শক্তি সম্পদ ক্রয়) সেলসফোরস-এর ৮ বিলিয়ন ডলারে ইনফরমেটিকা অধিগ্রহণ, যা বড় চুক্তির গতি বৃদ্ধি নির্দেশ করে।


ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচনের পর ব্যাংকাররা চুক্তি কার্যক্রম নিয়ে আশাবাদী হন। তবে বছরের প্রথম প্রান্তিকে হঠাৎ শুল্ক নীতির পরিবর্তনে এই কার্যক্রম কিছুটা পিছিয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাহীরা জানান, শুল্কজনিত অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও অনেক ক্লায়েন্ট চুক্তি কার্যক্রমে এগিয়ে আসছেন। ট্রাম্প যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করবে না, তাদের ওপর কঠোর শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন।

ডেভিড সোলোমন সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি নিয়ে সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ১৫ মে-এর তুলনায় ১৫ জুলাইয়ে আত্মবিশ্বাস যে বেশি, তা অস্বীকার করা কঠিন। আর আত্মবিশ্বাস বেশি হলে, সেটা মানুষের আচরণে প্রতিফলিত হবেই।

গোল্ডম্যান স্যাকসের শেয়ারের মূল্য বুধবার বিকেলে ০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।