শিরোনাম

ঢাকা, ২০ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশন (একেএফ) এবং পাকিস্তান কাবাডি ফেডারেশনের (পিকেএফ) সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ সরওয়ার রানা চলমান দ্বিতীয় মহিলা কাবাডি বিশ্বকাপ ২০২৫ দেখতে ঢাকা এসেছেন। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের কার্যক্রম, দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপ ও পরবর্তী ইভেন্টগুলো আয়োজনের পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে নিয়ে নিজের মতামত ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন তিনি।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। এখানকার আয়োজন কেমন? আপনি কী দেখছেন?
উত্তর: আয়োজন বিশ্বকাপ স্তরের এবং এমনকি বিশ্বকাপের থেকেও অনেক উন্নত ও চমৎকার। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে যে ভবিষ্যতে তারা আরও বড় কাবাডি ইভেন্ট পরিচালনা করতে সক্ষম। আমি বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের অত্যন্ত প্রশংসা করি এবং অভিনন্দন জানাই যারা এই চমৎকার কাজটি করছে। এটি নিঃসন্দেহে অসাধারণ, বিস্ময়কর। আমি খুবই খুশি। আমি ভাবতে পারিনি যে, বাংলাদেশ এটি করতে পারবে। কিন্তু বাংলাদেশ তা প্রমাণ করেছে এবং তারা উভয় দিকই প্রমাণ করেছে- আয়োজনের পদ্ধতি এবং দলগুলোর প্রস্তুতি। এর মানে হলো এখন বাংলাদেশের কাবাডি ফেডারেশন নিরাপদ হাতে আছে। সত্যি বলতে, যখন আমি হোটেল, বিমানবন্দর এবং ভেন্যুতে, রাস্তায় পোস্টারে দেখলাম যে, কাবাডি বাংলাদেশের জাতীয় খেলা। এর মানে হলো এখন যারা কাবাডি পরিচালনা করছেন, কাবাডি বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমি ফেডারেশনকে অভিনন্দন জানাই, এবং তারা সত্যিই একটি অসাধারণ কাজ করেছেন।
প্রশ্ন: এই আয়োজনের এমন কোন দিকগুলো বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে আপনাকে? পাশাপাশি বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের জন্য আপনার কোনো সুপারিশ আছে কী?
উত্তর: আমি পার্থক্য লক্ষ্য করছি। আজ আমার এখানে প্রথম দিন। আমার ছেলের সন্তান হওয়ায় আমি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পারিনি। আমার পরিবারে এটি প্রথম সন্তান, যে কারনে আমি সেখানে ছিলাম। সত্যি আমি উদ্বোধন মিস করেছি। আমি ভেবেছিলাম এটি অতীতের মতোই সাধারণ হবে, কিন্তু এটি অতীতের মতো সাধারণ নয়।
প্রশ্ন: আপনার পরিবারে নতুন অতিথির জন্য অভিনন্দন। এই চলমান কাবাডি বিশ্বকাপে মাত্র ১১টি দল খেলছে। আপনার কি মনে হয় এমন আয়োজন সামনের দিকে আরও বেশি দেশকে আনতে পারলে প্রতিযোগিতা আরো আকর্ষনীয় হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, আমরা তা করতে পারি। শুধুমাত্র একটি কাজ বাকি ছিল, আর তা হলো তিন, চার, পাঁচ বা ছয়টি দল আরও অন্তর্ভুক্ত করা। মান ইতোমধ্যেই আগের থেকে, অন্যান্য বিশ্বকাপের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে অসাধারণ, বিস্ময়কর।
আমি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে অভিনন্দন জানাই যারা এই দলকে (আয়োজনে সংশ্লিষ্ট যারা) বেছে নিয়েছে। কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে, বাংলাদেশ এই ধরণের ইভেন্ট পরিচালনা করতে সক্ষম। কিন্তু আপনাদের ফেডারেশন, আপনাদের ম্যানেজমেন্ট, বর্তমানে বাংলাদেশের কাবাডির পিছনে যে দলটি কাজ করছে, তারা তাদের দক্ষতা, তাদের নিবেদন, এই খেলাটিকে উন্নত করার জন্য তাদের আগ্রহ প্রমাণ করেছে। তাদেরকে অভিনন্দন। এটাই আমার শেষ কথা।
প্রশ্ন: এই সংস্করণে মাত্র তিনটি দক্ষিণ এশীয় দল খেলছে - ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশ। কিন্তু আরও দক্ষিণ এশীয় দল আছে... এমনকি পাকিস্তানও খেলছে না।
উত্তর: হ্যাঁ, আমরা (পাকিস্তান দল) এখানে আসতে চেয়েছিলাম। আমি পাকিস্তানের লোক, আমি পাকিস্তান কাবাডি ফেডারেশনের সেক্রেটারি। কিন্তু আমরা বাহরাইন গেমস নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম এবং সময়ের স্বল্পতার কারণে আসতে পারিনি। এছাড়া জাতীয় গেমসও ছিল। এই টুর্নামেন্টের (বিশ্বকাপ) পরে আমরা বাংলাদেশকে পাকিস্তানে আমন্ত্রণ জানাবো। এবং এই বিশ্বকাপের ঠিক পরই আমরা বাংলাদেশে আসব।
আমাদের মেয়েরা, আমাদের দল, আমাদের ফেডারেশন, তারা বাংলাদেশে আসতে ভালোবাসে।
প্রশ্ন: দক্ষিণ এশিয়ায় সাফ ফুটবলের মতো কোনো আঞ্চলিক ইভেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা কি আপনাদের আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, এখন আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। আমরা এই পরিকল্পনা করতে পারি। আসলে বাংলাদেশই এটি প্রমাণ করেছে। এই দেশে আরও ইভেন্ট হওয়া উচিত। আমি ভবিষ্যতে পূর্ণ সমর্থন করব, কারণ আয়োজনের মান, খেলাধুলা-প্রেমী মানুষের সম্পৃক্ততা এবং আপনাদের মিডিয়া দলও... চমৎকার কাজ করছে, প্রতিটি দিকই উৎকৃষ্ট।
প্রশ্ন: নারী বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন কে হবে? আপনার ভবিষ্যদ্বাণী কী?
উত্তর: বর্তমানে এই সময়ে ভারতের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ভারত দীর্ঘদিন ধরে কাবাডির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে। তাদের দেশে পেশাদার লীগও আছে। এমনকি তাদের নারীরাও দীর্ঘদিন ধরে খেলছে। পাকিস্তান মাত্র দুই বা তিন বছর আগে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সম্ভবত দশ বছর আগে শুরু করেছে, আমি মনে করি। কিন্তু ভারতীয়রা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে খেলছে, তাদের নারীরা খেলছে। এমন টুর্নামেন্টের মাধ্যমে দলগুলোর মধ্যে ব্যবধান কমছে। তারপর ভবিষ্যতে কে বিজয়ী হবে তা ভাগ্যের উপর নির্ভর করবে। তবে এখানে, ভারতই ফেভারিট।
প্রশ্ন: ১৩ বছরে এটি মাত্র দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। পরের বিশ্বকাপ কবে হবে?
উত্তর: সমস্যা ছিল। আমাদের আঞ্চলিক ফেডারেশনগুলোর মধ্যে সমস্যা ছিল। বিভিন্ন ধরণের সমস্যা। আমি কারও নাম নিতে চাই না, তবে এখন সেগুলির সমাধান হয়েছে এবং কাবাডি উর্ধ্বমুখী গতিতে আছে। এখন আমরা চার বছরের ক্যালেন্ডার প্রকাশ করব এবং ইনশাআল্লাহ, তা মেনে চলার চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: এই বছর ইউরোপীয় দল যেমন পোল্যান্ড এবং জার্মানি খেলছে, এমনকি আফ্রিকান দলও খেলছে। বিশ্বব্যাপী এই খেলাটিকে জনপ্রিয় করার কোনো পরিকল্পনা কী আপনাদের আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে ভালো মেগা কাবাডি ইভেন্ট আয়োজনের, বিভিন্ন অংশে যেমন বাংলাদেশ, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং ইরান, পাকিস্তানের মতো জায়গায় মেগা কাবাডি ইভেন্ট আয়োজন করার জন্য। তাই আমরা তাদের আমন্ত্রণ জানাব। এই ইউরোপীয় দলগুলি নতুন এসেছে। কিন্তু আপনারা জানেন, তাদের ক্রীড়া পরিকাঠামো এশিয়ান এবং আফ্রিকান এবং অন্যান্য মহাদেশের খেলার চেয়ে উন্নত। তাই তারা অল্প সমযয়ের মধ্যেই এই খেলাটি শিখবে এবং সেরা দলগুলির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবে।