শিরোনাম

ঢাকা, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস) : দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আগামীকাল সোমবার ঢাকায় শুরু হচ্ছে।
আসরে অংশ নিচ্ছে ১১ দেশ, যার মধ্যে রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত, রানার্সআপ ইরান এবং আয়োজক বাংলাদেশ। ঢাকায় ইতোমধ্যেই দশ অতিথি দল এসে পৌঁছেছে এবং তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ নারী দল, যারা নিবিড় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে টিম হোটেলে উঠেছে।
আজ প্রধান উপদেষ্টার সরকারী বাসভবন যমুনায় নারী বিশ্বকাপের ট্রফি উন্মোচন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ট্রফি উন্মোচন করেন, যেখানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, ইন্টারন্যাশনাল কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বাহারুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ এবং অংশগ্রহণকারী দলের অধিনায়করা উপস্থিত ছিলেন।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে আগামীকাল আসরের উদ্বোধন করবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইন্টারন্যাশনাল কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ যেকোনো পর্যায়ের কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত ‘তারুণ্যের উৎসব’ উদযাপনের অংশ হিসেবে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করা হচ্ছে।
২০১২ সালের ১ থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত প্রথম আসর হয়েছিল ভারতের পাটনায় । সেই আসরে ভারত ফাইনালে ইরানকে ২৫-১৯ পয়েন্টে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ১৬ দেশ চার গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রথম আসরে অংশ নিয়েছিল। বাংলাদেশ ‘সি’ গ্রুপে অপরাজিত থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। জাপানের কাছে ১৫-১৭ পয়েন্টে হেরে শেষ হয়েছিল বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান; আসরে লাল-সবুজরা ছিল পঞ্চম স্থানে।
এবার ঘরের মাঠে বাংলাদেশ দলের সামনে আছে পদক জয়ের হাতছানি। চলতি বছরের মার্চে ইরানে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে ঐতিহাসিক ব্রোঞ্জ পদক জয়ের পর থেকেই দলটি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে। কোচিং স্টাফরা জানিয়েছেন, আগের তুলনায় বাংলাদেশ দল এখন ফিটনেস, কৌশলগত দিক এবং দলীয় সমন্বয়ে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে, যা লাল-সবুজের প্রধান শক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রধান কোচ আরদুজ্জামান মুন্সি এবং অধিনায়ক রূপালী আক্তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন যে তারা প্রথম বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে যেতে প্রস্তুত। আগামীকাল মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ম্যাচগুলো শুরু হবে।
আসরের এ-গ্রুপে বাংলাদেশ লড়বে ভারত, থাইল্যান্ড, উগান্ডা এবং জার্মানির বিপক্ষে। অন্যদিকে ৬ দেশ নিয়ে সাজানো বি-গ্রুপে রয়েছে ইরান, নেপাল, চাইনিজ তাইপে, পোল্যান্ড, কেনিয়া এবং জাঞ্জিবার।
বিকেল ৩.০০টায় উগান্ডার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে।
প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল নিয়ে ২৩ নভেম্বর সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে ২৪ নভেম্বর।
বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন ঢাকায় স্মরণীয় ও ঐতিহাসিক আয়োজনের মাধ্যমে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করতে চায়। আসরের আগে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এ আয়োজন সফল করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আমরা নিশ্চিত যে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের নির্বিঘ্ন আয়োজন নিশ্চিত করবে। বিশ্বকাপের মতো মর্যাদাপূর্ণ আয়োজন পৃষ্ঠপোষকদের উদার সহায়তা ছাড়া সম্ভব হত না।’
এস এম নওয়াজ সোহাগ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কাবাডি পরিবারের প্রতিটি সদস্য এই আসরকে সুন্দর ও প্রাণবন্ত করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ জাতীয় নারী কাবাডি দলের সদস্যরা বিশ্বমঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য প্রস্তুত। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।’