শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বাসস) : এশিয়া কাপের ১৭তম আসরের ফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। আজ সুপার ফোরে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাকিস্তান ১১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করে পাকিস্তান। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থেকে এশিয়া কাপ শেষ করল বাংলাদেশ। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে আগেই ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান।
দুবাইয়ে টস জিতে প্রথমে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানান বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জাকের আলি। ইনজুরির কারণে এ ম্যাচেও খেলতে পারছেন না নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাস।
ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ ডেলিভারিতে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট উপহার দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। পাকিস্তান ওপেনার শাহিবজাদা ফারহানকে ৪ রানে বিদায় দেন তাসকিন। এই উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে শততম শিকার পূর্ণ করেন তিনি।
পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দেন স্পিনার মাহেদি হাসান। তিন নম্বরে নামা সাইম আইয়ুবকে রানের খাতা খুলতে দেননি মাহেদি। এবারের এশিয়া কাপে চতুর্থবার শূন্যতে আউট হলেন সাইম। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক সিরিজ বা টুর্নামেন্টে যৌথভাবে সর্বোচ্চ শূন্য রানে আউটের নজির এটি।
৫ রানে ২ উইকেট পতনের পর ২৯ বলে ২৪ রানের জুটি গড়েন ফখর জামান ও অধিনায়ক সালমান আঘা। ২০ বলে ১৩ রান করা জামানকে শিকার করে জুটি ভাঙেন স্পিনার রিশাদ হোসেন।
নিজের পরের ওভারেও উইকেট শিকারে মাতেন রিশাদ। আগের ম্যাচের হিরো হুসেন তালাতকে ৩ রানে বিদায় করেন রিশাদ।
সাবধানে খেলতে থাকা সালমানকে শিকার করে ৪৯ রানে পাকিস্তানের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটান পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ২৩ বলে ১৯ রান করেন সালমান।
সালমানের বিদায়ে ব্যাটিংয়ে প্রমোশন নিয়ে ক্রিজে আসেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। ২টি ছক্কায় দ্রুত রান তুলতে থাকেন তিনি। তবে ১৩ বলে ১৯ রান করে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হন দু’বার জীবন পাওয়া আফ্রিদি।
৭১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ১শর নীচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু সেটি হতে দেননি উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ হারিস ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। ১৭তম ওভারে দলের রান ১শ পার করেন তারা।
১৮তম ওভারে দলীয় ১০৯ রানে হারিস-নাওয়াজ জুটি ভাঙেন মাহেদি। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ বলে ৩১ রান করা হারিসকে শিকার করেন মাহেদি। সপ্তম উইকেটে ২৪ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন হারিস-নাওয়াজ।
পরের ওভারে নাওয়াজকে আউট করেন তাসকিন। ১ চার ও ২ ছক্কায় ১৫ বলে ২৫ রান করেন নাওয়াজ।
নাওয়াজ ফেরার পর ইনিংসের শেষ ১০ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৫ রান তুলে পাকিস্তানকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন ফাহিম আশরাফ ও হারিস রউফ। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান করে পাকিস্তান। ফাহিম ১৪ ও হারিস ৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের তাসকিন ২৮ রানে ৩টি, মাহেদি ২৮ ও রিশাদ ১৮ রানে ২টি করে উইকেট নেন। মুস্তাফিজের শিকার ১টি।
জবাবে ইনিংসের পঞ্চম বলে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগে আফ্রিদির শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন পারভেজ হোসেন ইমন।
দ্বিতীয় উইকেটে ২১ বলে ২২ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আরেক ওপেনার সাইফ হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু চতুর্থ ও পঞ্চম ওভারে বিদায় নেন তারা। হৃদয় ৫ রানে আফ্রিদির এবং সাইফ ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৫ বলে ১৮ রানে রউফের শিকার হন।
চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভাল শুরু করেও স্পিনার নাওয়াজের শিকার হয়ে ১১ রানে আউট হন মাহেদি। ৪৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
উইকেট পতন ঠেকাতে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন নুরুল হাসান ও শামীম হোসেন। ১৯ বলে ২২ রান যোগ করে থামেন তারা। ২১ বলে ১টি ছক্কায় ১৬ রানে স্পিনার সাইমের বলে আউট হন নুরুল।
নুরুলের বিদায়ে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক জাকের। ৯ বলে ৫ রান করে সাইমের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ৭৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সপ্তম উইকেটে তানজিমের সাথে ১৮ বলে ২৪ রানের জুটি গড়ে থামেন শামীম। ২টি ছক্কায় ২৫ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন শামীম।
১৭তম ওভারে দলীয় ৯৭ রানে শামীম ফেরার পর তানজিম ও তাসকিনও দ্রুত বিদায় নেন। এতে ১০১ রানে নবম উইকেট পতনে বাংলাদেশের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করেছেন রিশাদ ও মুস্তাফিজ। কিন্তু রিশাদের ১১ বলে অপরাজিত ১৬ এবং মুস্তাফিজের অনবদ্য ৬ রানেও হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রান করে টাইগাররা। পাকিস্তানের আফ্রিদি ও রউফ ৩টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান : ১৩৫/৮, ২০ ওভার (হারিস ৩১, নাওয়াজ ২৫, তাসকিন ৩/২৮)।
বাংলাদেশ : ১২৪/৯, ২০ ওভার (শামীম ৩০, সাইফ ১৮, আফ্রিদি ৩/১৭)।
ফল : পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী।