শিরোনাম

ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫(বাসস) : বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক যেন আজ শোকের বই। সেখানে লেখার মাধ্যমে অনুগামী ও ভক্তরা নানাভাবে শ্রদ্ধার সাথে বেগম খালেদা জিয়াকে স্মরণ করেছেন।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। শোক প্রকাশ করছেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারাও।
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে লেখক ফাহাম আবদুস সালাম লিখেছেন, ‘তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) ভালোবেসে ছিলেন এই দেশ আর তার মানুষদের। সবচেয়ে সংকটময় কালেও তিনি তার স্বভাব থেকে বিচ্যুত হননি। বাংলাদেশে তার চেয়ে বড় কোনো রাজনীতিবিদ জন্মায়নি। বাংলাদেশে তার মতো একজন মানুষ আমি আর দেখিনি। খালেদা আমাদের লোক ছিলেন।’
সাংবাদিক ফারুক আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন,আজ আমি আমার রাজনৈতিক মাকে হারালাম। ভোর ছয়টায় বিএনপির মিডিয়া সেলের কাছ থেকে মেসেজটি পাওয়ার সাথে সাথেই অশ্রুসিক্ত নয়ন নিয়ে বসে পরলাম রিপোর্টটি জাতি ও বিশ্ববাসীকে জানানোর জন্য।
তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের ট্রেন যোগে দেশব্যাপী এরশাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলেন, সেই থেকে এরশাদের পতন পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একজন কর্মী হিসেবে এবং পরবর্তীতে রাজপথে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে রাজপথে ছিলাম।
শিপলু আহমেদ নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আরও একটি ইতিহাসের পরিসমাপ্তি। তিনি দলের ঊর্ধ্বে আপসহীন প্রতিচ্ছবি হয়ে বেঁচে থাকবেন ইতিহাসের পরতে পরতে। তাঁর গৃহীত অসংখ্য সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে এদেশের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে। ৯০’এর স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে একজন গৃহবধূ থেকে রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে আর্বিভূত হয়ে দেশ ও জনগণের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
মোহাম্মদ হাসীব লিখেছেন, তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) ছিলেন, তিনি আছেন, তিনি থাকবেন।
কাউসার আলম আরমান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) অমর হয়ে থাকবেন বাংলার প্রতিটি মানুষের অন্তরে। উনার মতো আপোষহীন নেত্রী দ্বিতীয় কেউ আছে বলে জানা নেই।
শামীম আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) চলে গেছেন, কিন্তু রেখে গেছেন প্রতিবাদের ভাষা,ফ্যাসিবাদ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবিচল এক রাজনৈতিক শিক্ষা। বাংলাদেশের জন্য তাঁর ত্যাগ ইতিহাসের পাতায় স্থায়ী হয়ে থাকবে। তিনি বেঁচে থাকবে মানুষের চেতনায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম।
সংগীতশিল্পী ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বেবী নাজনীন শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মতো নেত্রীর শূন্যতা বাংলাদেশের মানুষ সব সময় অনুভব করবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কাছাকাছি দেখার সুযোগ হয়েছে তাঁর।
বেবী নাজনীন লিখেন, ‘শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে যে কষ্ট দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে, এর বিচার মহান আল্লাহ অবশ্যই করবেন। তিনি দেশ এবং মানুষের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করছেন, রাজনীতির ইতিহাসে সেটা নজিরবিহীন। তাঁর মৃত্যুর খবরে আজ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে মানুষ, বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে সারা দেশ। মহান আল্লাহ তাঁকে বেহেশত নসিব করবেন ইনশাআল্লাহ।’
বেবী নাজনীন লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহ জিয়া পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দান করুন, এই মুহূর্তে আমি এই দোয়াই করি।’
সর্বশেষে বেবী নাজনীন লিখেছেন, ‘তাঁর এই অন্তিমযাত্রায় তিনি যেমন মানুষের দোয়া নিয়ে গেছেন, তেমনি দেশের মানুষের জন্য রেখে গেছেন আশীর্বাদ, যা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে মানুষের গণতান্ত্রিক শক্তি হয়ে কাজ করবে। তাঁর উত্তরসূরি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই শক্তির মাধ্যমেই নতুন এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে যাবেন।’
নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ লিখেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীকের বিদায়। বিদায় আপসহীন নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আল্লাহ আপনাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন।
নির্মাতা রেদওয়ান রনি লিখেন, বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। তার আদর্শ ও নেতৃত্ব এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে প্রভাবিত করেছে।
উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ ভোর ৬টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালে প্রথম বাংলাদেশের নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।