শিরোনাম

ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে জিয়া পরিবারের সম্পর্ক আত্নিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায়ও আম্মা (বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়া) ২১ নভেম্বর সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ডাক্তাররা তাকে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তুউনি উনার মনের সর্বোচ্চ শক্তি ও অসুস্থ শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি এক করে সেখানে গিয়েছিলেন। কারণ সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের পরিবারের সম্পর্কটা আত্মিক। আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সেদিন বলেছিল, অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পর তিনি মানসিকভাবে এতটা বুস্টআপ ছিলেন, যে তাকে দেখে অসুস্থ মনে হচ্ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সন্তান। যিনি নিজেও একজন দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার ছিলেন। মেজর থাকাকালীন মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন।’
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত শতাধিক সদস্যের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, জনগণের ভোটে বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে আপনাদের মধ্যে যোগ্যদের খুঁজে বের করে দেশ পুনর্গঠনের বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বিএনপির উদ্যোগে দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক কর্মসূচি চলছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছে। সুতরাং আমাদের সকলের দায়িত্ব সেই প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা। যেকোন মূল্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। কারণ দেশ পুনর্গঠনের পূর্বশর্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। এর কোনো বিকল্প নেই।
পূর্বনির্ধারিত এই বৈঠকে সামরিক বাহিনীর ১০১ জন অবসরপ্রাপ্ত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাটি পরিচালনা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক ছিলেন।
তারেক রহমান বলেন, রুমি সাহেব আপনার নিশ্চয় মনে আছে পুরান ঢাকা থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত একবার একটা মিছিল হয়েছিল। সেবার পুরো মিছিল আমি হেঁটে এসেছিলাম, আম্মাও (খালেদা জিয়া) সঙ্গে ছিলেন। সেখানে অনেক ভীড় হট্টগোল ছিল। তখন আপনি আমাকে কিছু একটা বলেছিলেন। আই অ্যাম ভেরি সরি, সেদিন আপনার সঙ্গে একটু রূঢ় ব্যবহার করেছিলাম। আই রিকোয়েস্ট মাই অ্যাপোলজি।
জবাবে মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমি বলেন, ‘আমি আপনার কাছে ক...তজ্ঞ থাকব। যেটা বলেছেন থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ, আই উইল রিমেম্বার ইট।’
এ আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভারতের ইঙ্গিতে তারেক রহমান দেশে আসছেন না, এ কথা ভাববার কারণ নেই। বিএনপি গণতন্ত্রের প্রশ্নে কখনো আপোস করেনি, করবেও না।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের নেতাকর্মীদের পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে আমাদের পরিপূর্ণ জয়লাভ করতে হবে। যে দলটি স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারা আবার ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এটি প্রতিহত করতে হবে। পাশাপাশি সাইবার যুদ্ধ মোকাবিলায় বিএনপিকে আরও প্র¯‘ত হতে হবে।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান, মেজর (অব.) রেজা করিম, মেজর (অব.) সামসুজ্জোহা, মেজর (অব.) জামাল হায়দার, মেজর (অব.) আজিজুল হক, কর্নেল (অব.) হারুনুর রশিদ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুজ্জোহা, এয়ার কমোডর (অব.) শফিক আহমেদ, রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোস্তাফিজ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, কর্নেল (অব.) জগলুল, লেফটেন্যান্ট (অব.) ইমরান কাজল, মেজর (অব.) গোলাম মান্নান চৌধুরী ও ক্যাপ্টেন (অব.) রেজাউর রহমান ও কর্নেল (অব.) হান্নান মৃধা।