বাসস
  ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২২:১৩

রাজধানীতে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে ৬৪ জেলার উদ্যোক্তাদের নিয়ে কর্মশালা

ঢাকা, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫(বাসস) :  ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ উদ্যোগ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৬৪ জেলার নাগরিক সেবা, ডিজিটাল সেন্টার ও ই-পোস্ট সেন্টারের প্রতিনিধি, উদ্যোক্তাদের নিয়ে দিনব্যাপী এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ডাক ভবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের উদ্যোগে এবং এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রামের সহযোগিতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় নাগরিক সেবা প্ল্যাটফর্মের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও কার্যপরিধি, উদ্যোক্তাদের দায়িত্ব, প্ল্যাটফর্ম ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারসংক্রান্ত প্রক্রিয়া, বিএমইটি ও বিআরটিএসহ বিভিন্ন সেবার লাইভ প্রদর্শন, ই-গভর্নমেন্ট স্কিলস, সেবা কেন্দ্রের ব্র্যান্ডিং, গ্রাহকসেবা ও আচরণগত দক্ষতা নিয়ে আলোচনা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা, সাইবার সিকিউরিটি ও তথ্য সুরক্ষার মৌলিক ধারণা এবং বিভিন্ন মৌলিক ও উন্নত ডিজিটাল টুলস নিরাপদ ব্যবহারের ওপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আয়োজকদের মতে, এসব দক্ষতা সেবা কেন্দ্রগুলোকে আরও আধুনিক, দক্ষ ও নাগরিকবান্ধব সেবা কেন্দ্রে রূপান্তর করতে সহায়ক হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দেশে সরকারি সেবা গ্রহণে এখনও সময়, খরচ ও জটিলতা বড় চ্যালেঞ্জ। এই প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল সেন্টার, নাগরিক সেবা কেন্দ্র ও ই-পোস্ট সেন্টারের উদ্যোক্তারা সেবা প্রদান ব্যবস্থার প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, উদ্যোক্তা-নেতৃত্বাধীন সেবা মডেল একদিকে সেবার প্রবেশগম্যতা বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে প্রশিক্ষিত উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সেবার মান ও নাগরিক আস্থা নিশ্চিত করছে।

তিনি আরও জানান, সাধারণ মানুষের হয়রানিমুক্ত ও সহজ সেবা প্রাপ্তির প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস চলতি বছরের ২৬ মে ‘নাগরিক সেবা প্ল্যাটফর্ম’ উদ্বোধন করেন। 

জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন, পাসপোর্ট, অনলাইন জিডি, ভূমি সেবা, ট্রেড লাইসেন্স, টিকিটিং, সামাজিক সুরক্ষা, বিআরটিএ, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবা সহ  বিভিন্ন সরকারি সেবা এক প্ল্যাটফর্ম থেকে গ্রহণের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। 

বর্তমানে ৪৬৫টি সেবা ডিজিটাইজড হয়েছে এবং ধাপে ধাপে নাগরিক সেবা প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সেবাগুলোকে সংযুক্ত করার কাজ চলছে।

এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহা. আব্দুর রফিক জানান, নাগরিক সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে এখন থেকে সরকারি সেবাগুলোর আবেদন থেকে সেবা গ্রহীতা সেবা হাতে পাওয়া পর্যন্ত পুরো একটি সেবা কেন্দ্র থেকে যাতে নিতে পারেন তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।

এটুআইয়ের হেড অব প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট আব্দুলাহ আল ফাহিম বলেন, ডিজিটাল সেন্টার, ই-পোস্ট সেন্টার ও নাগরিক সেবা বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে, যার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তাদের কার্যক্রমে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাবেন।

উদ্যোক্তাদের পক্ষে সিরাজগঞ্জের রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা সাব্বির আহমেদ ও ঢাকার আশুলিয়া ই-পোস্ট সেন্টারের উদ্যোক্তা খন্দকার কণা আক্তার মতামত ব্যক্ত করেন।

তারা বলেন, এ কর্মশালা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতা নিজ জেলায় অন্যান্য উদ্যোক্তাদের সঙ্গেও ভাগ করে নেবেন।

অনুষ্ঠানে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন, ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক (মেইলস) কবির আহমেদ, আইসিটি বিভাগের যুগ্মসচিব (ডিজিটাল গভর্নেন্স ও সিকিউরিটি অনুবিভাগ) মো. মজিবর রহমান এবং এটুআইয়ের যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর উপস্থিত ছিলেন।