শিরোনাম

ঢাকা, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এই দেশ ভয়াবহ স্বৈরাচারের হাতে পড়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরের পাঁচ বছর আমরা একটা ভয়াবহ স্বৈরাচারী সরকারের হাতে পড়েছিলাম।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন : অন্তর্বর্তী আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
পরবর্তীতে বিএনপির হাতে ধরেই দেশের সংস্কার হয়েছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর আমরা কিন্তু সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলাম। মিডিয়ার যে স্বাধীনতা তা বিএনপি প্রতিষ্ঠিত করেছিল। আমরা প্রেসিডেনশিয়াল ফর্ম অব গভমেন্ট থেকে পার্লামেন্টারি ফর্ম অব গভমেন্ট নিয়ে এসেছি। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে আপত্তি করলেও আমরাই কিন্তু ইলেকশন করে পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক গভর্মেন্টের ব্যবস্থা পাস করেছিলাম। এগুলো তো অস্বীকার করবার কোনো উপায় নেই।
সংস্কার নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র মেরামতের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছিলেন। এরপর ২০২২ সালে ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আমরা সবাইকে নিয়ে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। সুতরাং বিএনপির জন্ম হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জাতি হিসেবে ঠিক এক্সাক্টলি কোন জায়গায় কীভাবে যেতে চাই, সেটা আমরা সঠিকভাবে অনুভব করতে পারছি কিনা, তা এখন আমাদের ভাবা উচিত। এত বড় একটা গণঅভ্যুত্থান, এত ত্যাগ ও প্রাণের বিনিময়ে সেই গণঅভ্যুত্থানকে আমরা ঠিকভাবে জাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে পারছি না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দেখছি, যতই দিন যাচ্ছে ততই বেশি আমরা বিভক্ত হয়ে পড়ছি। বিভক্ত হয়ে পড়াটা এটা কারা করছেন, কেন করছেন, এটাও আমাদের উপলব্ধি করতে করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ দাখিলের বিষয়ে তিনি বলেন, গতকাল ঐকমত্য কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশ দাখিল করেছে। ঐকমত্য কমিশনে যে বিষয়গুলোর সঙ্গে আমরা একমত ছিলাম না, সেখানে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল কমিশনের। কিন্তু অবাক করার বিষয় আমরা লক্ষ্য করলাম, সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। এটা তো ঐকমত্য হতে পারে না। তাহলে এই ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন?
এ সময় তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে এই বিষয়গুলো আবারও সংশোধনের দাবি জানান ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনি জনগণের সামনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে আপনি এখানে সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কারগুলো করে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে, সেই পার্লামেন্ট এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। সুতরাং যদি এর থেকে কোনো ব্যতয় ঘটে, তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই বহন করতে হবে।
তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনে সকল দলগুলো যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি এবং যেগুলোতে দ্বিমত পোষণ করেছি, সব কিছু নিয়ে অবিলম্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্য দিয়ে আমরা একটা জনগণের একটা পার্লামেন্ট গঠন করতে পারব এবং দেশে জনগণের শাসন ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারব।