বাসস
  ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৩৯

রাজধানীর সুপারশপগুলোকে ভোক্তা-বান্ধব করতে মতবিনিময় সভা

ঢাকা, ২১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : রাজধানীর সুপারশপগুলোকে ভোক্তা-বান্ধবরূপে গড়ে তুলতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ মঙ্গলবার ভোক্তা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফারুক আহম্মেদের সভাপতিত্বে সুপারশপগুলোর প্রতিনিধির সঙ্গে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকরা বাজার পরিদর্শনের সময়ে ও নিজ-নিজ কার্যালয়ে অভিযোগের শুনানীকালে সুপারশপগুলোর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাওয়া যায়, সেসব বিষয় তুলে ধরেন এবং এসব অভিযোগ নিজেরা উদ্যোগী হয়ে সমাধান করার ও সেবার মান বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

সুপারশপ সমূহের পক্ষে উপস্থিত কর্মকর্তাগণ তাদের নিজ-নিজ মতামত ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতামুলক বাজারে টিকে থাকতে হলে ও নিজ-নিজ কাস্টমারদের ধরে রাখতে হলে সুলভমুল্যে মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করার বিকল্প নেই। তারা তাদের পণ্য ও প্রদত্ত সেবার মান বৃদ্ধিতে সচেষ্ট থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফারুক আহম্মেদ বলেন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ, মানহীন, অবৈধ পণ্য কিংবা নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করার সুযোগ নেই। এগুলো দণ্ডনীয় অপরাধ। বিদেশি পণ্য বিক্রি করতে আমদানী সিল ও সরকারি কর্তৃপক্ষের সিল থাকতে হয়।

কিন্তু বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন অনলাইনে ও বিভিন্ন সুপারশপ’র ব্রান্ড ভ্যালু কাজে লাগিয়ে নকল পণ্য বিক্রি করছে মর্মে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে, যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। এক্ষেত্রে ভোক্তাগণ প্রতারিত হচ্ছেন ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই সুপারশপগুলোকে নিজেদের স্বার্থেই পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে পণ্যের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে।

অধিদপ্তরের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলেন, ভোক্তা-স্বার্থ সংরক্ষণ করে ব্যবসা পরিচালিত হলে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক তৈরি হয়, যা ন্যায্যতাভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়তা করে থাকে।

সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতিটি সুপারশপ কর্তৃপক্ষ নিয়মিত আউটলেট চেক করবেন, মানহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য থাকলে তা অপসারণ করবেন ও আউটলেট পরিচালকারী কর্মকর্তাদের কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি করবেন ও তাদের জন্য ভোক্তা অধিকার আইনসহ অন্যান্য বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণের আয়োজন করবেন।

সেইসঙ্গে, সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয় যে চটকদার বিজ্ঞাপন দ্বারা ভোক্তাদের প্রলুব্ধ করা যাবে না, অফারে মানহীন পণ্য বিক্রি করা যাবে না, ভোক্তাগণ কোন পণ্য ক্রয় করে সংক্ষুব্ধ হলে কত সময়ের মধ্যে কোথায় অভিযোগ জানাবেন সে কর্মকর্তা ও বিকল্প কর্মকর্তার নাম ও মোবাইল নম্বর আউটলেটের সামনে দৃষ্টিগোচর স্থানে প্রদর্শন করতে হবে এবং সব আউটলেটে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করতে হবে।

তাছাড়া সুপারশপ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কনজুমার-বান্ধব এন্টারপ্রাইজ এসোসিয়েশন গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাই করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় অন্যান্য সেক্টরের সঙ্গেও পর্যায়ক্রমে এ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হবে মর্মে জানানো হয়।

আজকের এ মতবিনিময় সভায় স্বপ্ন, আগোরা, ইউনিমার্ট, প্রিন্স বাজার, আমানা বিগ বাজার, ট্রাস্ট ফ্যামিলি নিডস সুপার শপসহ অন্যান্য সুপারশপ’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

সভায় অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কার্যক্রম) আতিয়া সুলতানা, উপ-পরিচালক (অভিযোগ) মাসুম আরেফিন, উপ-পরিচালক (প্রচার ও প্রশিক্ষণ) আফরোজা রহমান, উপ-পরিচালক (তদন্ত) শাহনাজ সুলতানা, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস,  সহকারী পরিচালক (তদন্ত) নাসরিন সুলতানা, সহকারী পরিচালক (অভিযোগ) মো. শাহ আলম, এবং ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান অংশগ্রহণ করেন।