বাসস
  ২২ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৫৫

দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি এজেডএম জাহিদ হোসেনের

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা, ২২ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।

আজ এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হাসেন এই দাবি জানান। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা-বাংলাদেশ’র উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা অস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আর বিলম্ব নয়। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগের মধ্যে নির্বাচনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনকে যে রিকোয়েস্ট করেছেন। এখন আমরা চাই, অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।'

নির্বাচন নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নানা ধরনের বক্তব্যের সমালোচনা অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা বলেন, পিআর না হলে নির্বাচনে যাবো না। আপনি যে এই কথাটি বলেন, এই কথাটির ইমপ্লিকেশন চিন্তা করেছেন। আজকে যদি নির্বাচন প্রলম্বিত হয়, নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, নির্বাচন যদি যথাসময়ে না হয় তাহলে লাভ কাদের? লাভ হচ্ছে, পতিত স্বৈরাচারে রেখে যাওয়া যে সমস্ত এই সুবিধাভোগীরা আজকে প্রশাসনে বলেন, বিচারালয়ে বলেন, ব্যবসা কেন্দ্রে বলেন, সর্বত্র ছড়িয়ে আছে তাদের।'

তিনি বলেন, ‘তারা দেশে এবং দেশের বাইরে বসে তাদের নেত্রী যে ষড়যন্ত্র করছে নির্বাচন হতে দেবো না, নির্বাচন এটা করতে দেবো না, অর্থাৎ এক ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে লাভ কাদের? লাভ হচ্ছে পলায়নকৃত স্বৈরাচারের। আপনারা যারা বুঝে না বুঝে বিভিন্ন দাবি তুলে আজকে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চান তারা কি প্রকারান্তরে স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করছেন কিনা সেইটি কি বিবেচনা করেছেন?'

জাহিদ হোসেন বলেন, রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করুন। কোন অবস্থাতেই গায়ের জোরে কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। গায়ের জোর থাকা ভালো। গায়ের জোর কোন পারপাসে আপনি ব্যবহার করবেন সেটি আপনার মনে রাখতে হবে। গায়ের জোর যদি আপনি ন্যায়ের জন্য করেন আপনাকে মানুষ সাধুবাদ জানাবে।

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘যারা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেন, গতকাল দেখলাম বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, পিআর পদ্ধতি হলে সত্যিকার অর্থে ধ্বংসের দিকে দেশ এগিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচনই একমাত্র পথ। এখন সমস্যাটা হয়ে গেছে, আমরা সবাই বিচার মানি তাল গাছটা আমার, এটা আমাদের একটা মানসিকতা হয়ে গেছে।

ডা. জাহিদ বলেন, দেশের স্বার্থে আসুন, সবাই মিলে আমরা জনগণের কাছে যাই। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই আগামী দিনে সিদ্ধান্ত নেবে এই দেশের শাসন ব্যবস্থা কিভাবে চলবে? দেশ কীভাবে পরিচালিত হবে? তখন ওখানে (সংসদ) আলোচনা করা যাবে, ডিবেট করা যাবে, পরবর্তী নির্বাচন কীভাবে আপনারা করবেন। যেটা জনগণ চাইবে, যেটা জনগণ মানবে, যেটা জনগণ ভালো মনে করবে সেটাকে জনগণ গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি আস্থা রাখুন। জনগণকে অনাস্থায় নিলে কি পরিণতি হয় ৩৬ জুলাই দেখেছেন। কাজেই দয়া করে সেটির পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করবেন না।’

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে ও জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় গণফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহবুব হোসেন, নজরুল ইসলাম, উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্মী, আবুল কাশেম চৌধুরী, গাজী মোশাররফ হোসেন ও আজহারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।