শিরোনাম
ঢাকা, ১১ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক মহাখালী নার্সিং কলেজের সামনের রাস্তার উন্নয়ন কাজ, প্রকল্পে দ্বৈত বরাদ্দ এনে অর্থ আত্মসাৎ এবং জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিভিন্ন নির্মাণ ও সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে আরও একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।
আজ দুদকের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিঞ্জপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
দুদক জানায়, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে পরিদর্শনে দেখা যায়, রোগীদের বসার জন্য নির্মিত শেড তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে, ভেতরে কোনো ফ্যান নেই; পানির ফিল্টার বসানো হলেও তা অচল; মাত্র এক বছর আগে নির্মিত স্টোর রুমের ছাদে বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ছে এবং আনসারদের থাকার জন্য নির্মিত শেডে বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে।
এদিকে, পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা পৌরসভার উদ্যোগে সমুদ্র তীরে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১,৩০০ মিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণে নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে দেখতে পায়, সড়কটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী এ সড়কের ভাঙন রোধে কোনো রিটেইনিং ওয়াল, জিও ব্যাগ বা কংক্রিট ব্লক ব্যবহার করা হয়নি। ফলে নির্মাণের অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কের একাংশ সমুদ্রের ঢেউয়ে বিলীন হয়ে গেছে এবং অবশিষ্ট অংশও ধীরে ধীরে ক্ষয়ের মুখে রয়েছে।
অন্যদিকে, কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগত রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে অনিয়ম এবং সরকারি এম্বুলেন্সে রোগী পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের কুড়িগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়, হতে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে এনফোর্সমেন্ট টিম ছদ্মবেশে হাসপাতালে উপস্থিত থেকে ওষুধ বিতরণ কাউন্টার, ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড, হাসপাতালের গেটসহ বিভিন্ন স্থান পর্যবেক্ষণ করে। রোগীর আত্মীয় পরিচয়ে দুদক টিমের একজন সদস্য এম্বুলেন্স ড্রাইভারকে কল দিলে তিনি নিজে না এসে অন্য একজনকে পাঠান এবং আগত ড্রাইভার নাগেশ্বরী থেকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রোগী পরিবহনের জন্য ১,৩০০ টাকা দাবি করেন, যা নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রমসমূহের প্রমাণ বহন করে।
এছাড়া হাসপাতালের ওয়ার্ড পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ওয়াশরুমগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। রোগীর খাবার পর্যবেক্ষণকালে রান্না করা মাছের প্রতিটি টুকরার ওজন ১৪০ গ্রাম থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে মাত্র ৩৪ গ্রাম পাওয়া যায়। বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। অভিযান চলাকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রায় ১৫-২০ জন ওষুধ কোম্পানির সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভের উপস্থিতি লক্ষ্য করা হয়, যাদের মধ্যে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা নিয়মবহির্ভূতভাবে হাসপাতালে প্রবেশের কথা স্বীকার করে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে মর্মে লিখিত মুচলেকা প্রদান করে। উপস্থিত সেবাগ্রহীতাগণ দুদক টিমের এ অভিযানকে স্বাগত জানান।