শিরোনাম
খুলনা, ১০ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) রাজস্ব খাতে ৮০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি।
নয়টি বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে এখনও ৪৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বকেয়া থাকা সত্ত্বেও এ বছরের রাজস্ব আদায়কে রেকর্ড হিসেবে অভিহিত করেছেন কেসিসি কর্মকর্তারা।
কেসিসির রাজস্ব শাখার তথ্য অনুযায়ী, রাজস্ব আয়ের বড় অংশ—৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকা এসেছে হোল্ডিং ট্যাক্স, কনজারভেন্সি ও বিদ্যুৎ খাত থেকে, যা গত বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এস্টেট শাখার রাজস্ব আয় ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ কমে ১৭ কোটি ২৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
অপরদিকে, ট্রেড লাইসেন্স থেকে উল্লেখযোগ্য হারে আয় বেড়েছে, যার আয় ৯৫ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সংগ্রহ হয়েছে।
পরিবহন লাইসেন্স খাতে ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ আয় বেড়ে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা, হাট-বাজার খাতে ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ আয় বেড়ে ৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কেসিসি মোট ৭৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছিল, যার মধ্যে হোল্ডিং, কনজারভেন্সি ও বিদ্যুৎ খাত থেকে ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, এস্টেট শাখা থেকে ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা, ট্রেড লাইসেন্স থেকে ৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা, পরিবহন লাইসেন্স থেকে ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং হাট-বাজার থেকে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়।
কেসিসি প্রশাসন ২০২৪ সালের জুনে ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ৮২ কোটি ৪১ লাখ টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। এর মধ্যে হোল্ডিং, কনজারভেন্সি ও বিদ্যুৎ খাত থেকে ৪৫ কোটি টাকা, এস্টেট শাখা থেকে ২৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ট্রেড লাইসেন্স থেকে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পরিবহন লাইসেন্স থেকে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং হাট-বাজার থেকে ৪ কোটি টাকা আহরণের লক্ষ্য ছিল।
বাসস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেসিসির রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল মাজেদ জানান, সিটি কর্পোরেশন লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের রাজস্ব আয় প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। আমরা নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করে নাগরিক সেবা উন্নয়নে কাজ করছি।
তিনি আরও জানান, নয়টি প্রতিষ্ঠানের কাছে এখনও ৪৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন বন্ধ। এদের মধ্যে রয়েছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা), বাংলাদেশ রেলওয়ে (২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা), বাংলাদেশ নৌবাহিনী (২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা) এবং বেশ কয়েকটি বন্ধ কারখানা ও মিল। যেমন- ঢাকা ম্যাচ কোম্পানি, সোনালী জুট মিলস, খুলনা হার্ডবোর্ড মিলস, খুলনা নিউজপ্রিন্ট লিমিটেড ও আজাক্স জুট মিলস। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামেরও ৮৩ লাখ টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ শাসনামলে বন্ধ হয়ে যায়।
সাম্প্রতিক বাজেট প্রস্তুতি সভায় কেসিসির প্রশাসক ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার রাজস্ব আদায়ের এ সাফল্যের প্রশংসা করে বলেন, করহার না বাড়িয়েই সিটি কর্পোরেশন নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে।
তিনি রাজস্ব আদায়ে হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স প্রদানে অনলাইন পদ্ধতির অবদানের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আসন্ন বাজেট হবে বাস্তবসম্মত এবং বাড়তি করের বোঝা না দিয়ে নাগরিক সেবা শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে এটি প্রণয়ন করা হবে।
কেসিসির প্রশাসক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নগর সেবার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইলে রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই।