শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : দুর্যোগ সাংবাদিকতা প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও লেখক গওহার নঈম ওয়ারা বাংলাফ্যাক্টকে বলেন, ট্র্যাজেডির মুহূর্তে সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাজ শুধু দ্রুত তথ্য দেওয়া নয়, বরং সঠিক ও মানবিকভাবে তা উপস্থাপন করাও জরুরি।
প্রসঙ্গত, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণমূলক তথ্য পরিবেশন করে।
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাঙ্গণে জেট বিধ্বস্তের ঘটনায় অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে, যাদের অধিকাংশই শিশু। এমন এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকা যেমন জরুরি, তেমনি নৈতিক দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, সাংবাদিকদের অহেতুক ভিড় রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ছিল। প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে মানুষের যে ভিড় ছিল, তা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল। সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত। বাবা-মায়েদের একই প্রশ্ন বারবার করে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আহতদের ছবি তোলার এক ধরনের প্রতিযোগিতা দেখা গেছে মূলধারার অনেক মিডিয়ায়। আমরা টুইন টাওয়ার ধ্বংসের ঘটনা সম্পর্কে জানি, কিন্তু সেই ঘটনার বিভীষিকাময় ছবি কি আমরা দেখেছি? তবুও তা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল।
গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির ঘটনায় আগুনে পোড়া রোগীদের কাছে ভীড় জমানোর ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল, যা একটি নৈতিকতা-বহির্ভূত আচরণ। সাংবাদিকদের উচিত ছিল আক্রান্তদের প্রাইভেসি ও নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।
তিনি মনে করেন, শোক ও বিপর্যয়ের সময় সাংবাদিকদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবারকে ‘রেটিং’ বা ‘ভিউ’ পাওয়ার মাধ্যম হিসেবে না দেখে মানবিকতা দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। ভাষা হতে হবে সংবেদনশীল, মর্যাদাপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক।
গওহার নঈম বলেন, সাংবাদিকদের খেয়াল রাখতে হবে, তাদের কাজ যেন কারও শারীরিক বা মানসিক ক্ষতির কারণ না হয়। বিভীষিকাময় ছবি বা ভিডিও কিছু ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হতে পারে, কিন্তু এগুলোর নেতিবাচক প্রভাব থাকে দর্শকের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর; তাছাড়া তা ভুক্তভোগীদের বেদনা বাড়াতে পারে এবং তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাও লঙ্ঘিত হতে পারে।
তিনি আরো যোগ করেন, এক্সক্লুসিভ ফুটেজ ও ব্রেকিং নিউজের প্রতিযোগিতায় অনেক সময় মানবিকতা ও সাংবাদিকতার নৈতিকতা হারিয়ে যায়। দুর্যোগ সাংবাদিকতায় তথ্য পরিবেশন ও মানবিক মূল্যবোধ, এই দুইয়ের ভারসাম্য বজায় রাখা আবশ্যক।
বাংলাফ্যাক্ট বাংলাদেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধে কাজ করছে এবং জনসাধারণকে যাচাই করা তথ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দায়িত্ব পালন করছে।