শিরোনাম
ঢাকা, ২১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) ‘জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার ‘জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দীর্ঘ জীবন কাটানো শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ছিল না, বরং তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল অর্থপূর্ণ জীবন। যারা শহীদ হয়েছেন, তারা এ দেশের সূর্যসন্তান। তারা জীবন উৎসর্গ করার ব্যাপারে দু’বার ভাবেননি। তাদের আত্মত্যাগ জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং দেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করার আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গৌরবময় ইতিহাস সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনেক স্মৃতি সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের অবশ্যই সেগুলো সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করা দরকার।
‘জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা’ স্থাপনের মহৎ উদ্যোগের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৩০ বছর পরও কোনো শিক্ষার্থী এই সংগ্রহশালায় ঘুরতে আসলে তাদের মনে প্রশ্ন জাগবে, কেন এই তরুণরা জীবন দিয়েছেন। তখন তারা শহীদদের আত্মত্যাগ অনুধাবন করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান ঋণ স্বীকারের উপলক্ষ্য মাত্র। জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালাটি সীমিত পরিসরে উদ্বোধন করলাম। ধীরে ধীরে এটিকে পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে পরিণত করা হবে। এই সংগ্রহশালা জাতীয় সম্পদ। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলাদলি ও হিংসাত্মক মনোভাব পরিহার করতে হবে। রাজনৈতিক দলাদলির কারণে এ বিষয়গুলোকে নষ্ট হতে দেবো না।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা আলহাজ্ব শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া, শহীদ ওয়াসিম আকরামের বাবা শফিউল আলম, শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, শহীদ আবু সাঈদের ভাই আবু হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধি ও আহত শিক্ষার্থীরা।
মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার ছেলে সেদিন শুধু পানি আর বিস্কুট বিতরণ করেনি। সে পুলিশকে নিহতদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া এবং লুকিয়ে রাখা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছিল। সে আহতদের চিকিৎসা দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছিল।
ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে তিনি আরো বলেন, মুগ্ধকে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হোক। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন থাকুক। এই দেশে যেন আর কারো কালো ছায়া না পড়ে।
শহীদ আবু সাঈদের ভাই আবু হোসেন বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগ জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন সত্যি হোক।