বাসস
  ২১ জুন ২০২৫, ২২:৪৯

জুলাই ঘোষণাপত্র ছাড়া জনগণের অধিকার আদায় সম্ভব নয় : আলোচনা সভায় বক্তারা

ছবি : বাসস

ঢাকা, ২১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ‘জুলাই ঘোষণাপত্র : শহীদ পরিবারের ভাবনা’ বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র ছাড়া জনগণের অধিকার আদায় সম্ভব নয়। শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি সরকারকেই দিতে হবে। বিচার নিয়ে ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রশ্নে কোনো তালবাহানা মেনে নেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ স্পষ্ট বাংলাদেশে একটি সন্ত্রাসী দল।

ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) এর উদ্যোগে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র : শহীদ পরিবার ও আহতদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জুলাই ঐক্যের অন্যতম নেতা আব্দুল্লাহ আল মিনহাজের সঞ্চালনায় জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা করেন আপ বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, সদস্য সচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা ইরা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও আহতরা।

আলোচনা সভায় সুদূর কক্সবাজারের উখিয়া থেকে উপস্থিত ছিলেন একমাত্র বিদেশি ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী থেকে শহীদ হওয়া নূর মোস্তফার পিতা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জুলাই স্মৃতি বিষয়ক কমিটির প্রধান আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া।

‎সভায় আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার ডাকে জুলাইয়ে নামিনি। যে অস্ত্র-গুলি জনগণের টাকায় কেনা, তা জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার হওয়ার বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছি।’

তিনি বলেন, ১০ মাস পার হলেও শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন করা হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুনর্বাসন করতে হবে। শহীদ পরিবারের জন্য পাশ হওয়া সঞ্চয়পত্র যখন হাতে পাবে তখন থেকে লভ্যাংশ নয় বরং লভ্যাংশ ২০২৪ এর আগস্টের ৫ তারিখ থেকে দিতে হবে। অতিসত্বর ডিএনএ প্রোফাইল করে গণকবর দেয়া ও অজ্ঞাত শহীদদের পরিচয় শনাক্ত করতে হবে।

‎জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) এর সদস্য সচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ বলেন, ‘এই সরকারের প্রথম কাজ ছিল শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম যেখানে ১৪০০ এর বেশী শহীদের কথা বলেছে, সেখানে সরকার এখনো ৮৩৪ সংখ্যা পার হতে পারেনি।

‎আলোচনায় রোহিঙ্গা শহীদ নূর মোস্তফার পিতা বলেন, ‘শরণার্থী হলেও ভালোবাসা থেকে বাংলাদেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করার জন্য পরিবারের বাঁধা উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে এসেছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থী হওয়ায় তাদের পরিবারকে সহযোগিতা করা হয়নি।’

‎সভায় শতাধিক শহীদ পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, ‘আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি কিন্তু বৈষম্য আজও দূর হয়নি। একটা ইলেকশনের জন্য আমাদের সন্তানরা জীবন দেয়নি। সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বুক ফুলিয়ে বহাল তবিয়তে আছে। আমরা চাই বিচার, চাই জুলাই ঘোষণাপত্র, চাই ইনসাফ, মানুষের জন্য বাংলাদেশ। দৃশ্যমান বিচার ও সকলের প্রত্যাশার ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র ছাড়া অন্য কিছু আগে হতে দিবো না। গণকবরে যারা শুয়ে আছেন, তাদের পরিচয়টা পর্যন্ত ১১ মাসে আপনারা বের করতে পারলেন না।’

‎আলোচনায় শহীদ নাফিসা হোসেন মারওয়ার পিতা দাবি করেন অতিসত্বর খুনিদের বিচার কাজ ত্বরান্বিত করতে হবে ও জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে।