শিরোনাম
ঢাকা, ৮ মে, ২০২৫ (বাসস) : নারীবিদ্বেষী সকল প্রকার প্রচারণা বন্ধ করতে রাষ্ট্রকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে নারী সমতা বিরোধী ও মর্যাদা হানিকর বক্তব্য এবং আচরণের প্রতিবাদে বিকাল সাড়ে ৩ টায় আয়োজিত এই সম্মেলনে মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সামছুন নাহার কলি। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ‘নিজেরা করি’ এর সমন্বয়ক খুশি কবির, ‘প্রাগ্রস্বর’ এর নির্বাহী পরিচালক ফৌজিয়া খন্দকার ইভা, ‘বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ’ এর পরিচালক শাহনাজ সুমী এবং মডারেটর ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয় আজকে জাতীয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতিতে নারী যখন সকল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে দৃশ্যমান ভূমিকা রেখে চলেছে তখন নারীর মর্যাদা, অধিকার ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তাকে অবদমিত করার জন্য চলছে ক্রমাগত নানা ধরনের অপচেষ্টা।
সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে যে বিভিন্ন সভা সমাবেশ, গণপরিসর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক নারীবিদ্বেষী, অসম্মানজনক, অমর্যাদাকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এ ধরনের বক্তব্য ও আচরণ রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত নারী-পুরুষের সমতার নীতি এবং এ দেশে বসবাসকারী সকল ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, গোত্র, জাতিগত পরিচয় নির্বিশেষে সকল নাগরিকের মধ্যে বৈষম্যহীনতার নীতির সঙ্গে স্পষ্টতই সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ‘নিজেরা করি’ এর সমন্বয়ক খুশি কবির বলেন, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সংগঠনগুলো নিজ নিজ কর্মপরিকল্পনার আলোকে পত্রিকায় প্রকাশিত নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনাগুলো মনিটর করে থাকে। পাশাপাশি সমাজে নারী ইস্যুতে কখনও গভীর সংকটের সৃষ্টি হলে এই কমিটির সদস্য সংগঠনগুলো একত্রিত হয়ে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
‘প্রাগ্রস্বর’ এর ফৌজিয়া খন্দকার ইভা বলেন, সমাজে নারীর প্রতি অবমাননাকর ঘটনাগুলো পুরুষের দ্বারা হয় এবং হচ্ছে। আমরা নারী অধিকারকর্মীরা কোনো তন্ত্রের বিরুদ্ধে নই, আমরা কেবল নারীর সমতা, মর্যাদা এবং অধিকারটুকু চাই।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহনাজ সুমী বলেন, বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৫০ শতাংশ নারী। সংবিধান অনুযায়ী নারীদের সকল সুযোগ সুবিধা সমান হতে হবে, সিভিল ল’ অনুসারে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশ পরিচালিত হতে হবে।
মডারেটরের বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সম্মানের দিকটি এক নয়। নারীর অধিকার বাস্তবায়নে প্রচলিত আইন, সমাজ কাঠামো, রীতিনীতিতে থাকা বৈষম্য অবশ্যই দূর করার চেষ্টা রাষ্ট্রকে করতে হবে।
নারীর অধিকার রক্ষার আন্দোলন কেবল নারীর একার নয়, নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ ও সম্মানজনক অবস্থায় বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।