শিরোনাম
ঢাকা (উত্তর), ১মে, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমিক মালিকের সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃত্বের, শক্রর নয়। এটাই ইসলামের নির্দেশনা। শ্রমিক তার ন্যায্য অধিকার না পেলে শিল্প এগিয়ে যাবে না, বরং শ্রমিকরা কাজ না করলে শিল্প পিছিয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরা বাঁচলে, শিল্প বাঁচবে আর শিল্প বাঁচলে, শ্রমিকেরা বাঁচবে’ এই কথা মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষকে অনুধাবন করতে হবে।’
আজ রাজধানীর পল্টন মোড়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বিশাল শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও সাবেক এমপি ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমদ ও মজিবর রহমান ভূঁইয়া।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে কৃত্রিম সংকট ও সমস্যা সৃষ্টি করে একদল মানুষ ফায়দা লুটছে। ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দিয়ে শ্রমিকরা অনেক সময় নিজেদের কর্মস্থল ধ্বংস করছে। তারা বুঝতে পারছে না কর্মস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা দাবি জানাবে কোথায়? অপরদিকে কিছু মালিক অধিক মুনাফা করতে গিয়ে শ্রমিকদের পেটে আঘাত করছে। ফলে শ্রমিকরা কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। এতে উভয়ের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা শ্রমিক-মালিকের মধ্যে সব ধরনের দ্বন্দ্বের অবসান চাই।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক এবং কর্মজীবী মানুষ নানাভাবে নির্যাতিত এবং তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। মিল, ফ্যাক্টরি ও ইন্ডাস্ট্রিতে শ্রমিকদের উপযুক্ত মূল্যায়ন করা হয় না। তাদের শ্রমের মর্যাদা দেওয়া হয় না। এখনো বহু কলকারখানার কর্মপরিবেশ ঠিক করা যায়নি। সত্যিকার অর্থে যদি টেকসই একটি শান্তির বাংলাদেশ গড়তে চাই-তাহলে সমাজের প্রত্যেকে পরস্পর সম্মান এবং ভালবাসা দিয়ে এ সমাজকে গড়ে তুলতে হবে। যেদিন মালিকরা শ্রমিকদেরকে মন থেকে ভালোবাসবে এবং সম্মান দেবে, সেদিন শ্রমিকেরা মালিকের ষোলআনা পূরণ করবে। আর শ্রমিক যতদিন পর্যন্ত অনুভব করবে আমার মালিকতো আমাকে মানুষই মনে করে না, ততদিন পর্যন্ত মালিকের আয়-উন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মূল কাজ হচ্ছে মালিক এবং শ্রমিকের সমন্বয়ে, একটি পারস্পরিক ভালোবাসা এবং সম্মানের সমাজ গড়ে তোলা। আমরা সেই সমাজটাকেই দেখতে চাই।’
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, আমি বিশ্বাস করি শ্রমিকরা রক্ত পানি করে গায়ের ঘাম ফেলে যে টাকা আয় করে তা হালাল। তাদের গায়ের ঘাম আমার কাছে আতরের মতো। আমি যখন শ্রমিকের সংস্পর্শে যাই তখন অনেকে হাত মিলাতে চায় না, আমি তাদের বুকে নিয়ে নিই। এসো ভাই, আমি তোমাকে একটু বুকে নিয়ে নিই। কারণ আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, শ্রমিকরা ৫০০ বছর আগে জান্নাতে চলে যাবে।