বাসস
  ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ২০:১৩

বিএনপি কখনোই ইসলামের মূলনীতির সাথে আপস করবে না: তারেক রহমান

রোববার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম-খতিব পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: বাসস

ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তার দল ইসলামের মূলনীতি বা মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে অতীতে কখনো আপস করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ইসলামের মূল নীতি বা মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে কখনোই আপস করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না, ইনশাআল্লাহ।’

তারেক রহমান আজ রোববার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম-খতিব পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সবসময় ইসলামী সংস্কৃতির পক্ষে এবং ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী যেকোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার।

তিনি বলেন, ব্যর্থ, পরাজিত এবং পলাতক স্বৈরশাসন রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে বিভিন্ন উপায়ে ইসলাম, মুসলমান এবং ইসলামী সংস্কৃতিকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) কে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান দেওয়ার উদ্যোগ ২০০৬ সালে বেগম খালেদা জিয়ার সরকারই নিয়েছিল, কারণ কোনো পেশা বা চাকরির ক্ষেত্রে সনদের গুরুত্ব অপরিহার্য।

তিনি বলেন, দেশে বিভিন্ন স্তরের কওমি, আলিয়া, সরকারি, বেসরকারি, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে ৫ হাজারের বেশি মাদ্রাসা রয়েছে, যেখানে লাখ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

তারেক রহমান জানান, সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার বা তার একটু বেশি মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে প্রায় ১৭ লাখ ইমাম, খতিব ও মুয়ায্জিন ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বলেন, যদি দেশের লাখো মসজিদ, মাদ্রাসা, ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় উন্নয়নধর্মী কর্মকাণ্ডের বাইরে রাখা হয় তাহলে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব নয়। এ বাস্তবতার ভিত্তিতে বিএনপি ভবিষ্যৎ কর্মসূচিতে বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

তিনি স্বাধীনতার পর সংবিধান প্রণয়নের ধরণ সমালোচনা করে বলেন, ‘ব্যর্থ, পরাজিত ও পালাতক স্বৈরাচারের দল স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে নিজেদের ইচ্ছেমতো সংবিধান তৈরি করেছিল।’

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণের পর সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযুক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবিধানে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’- এই নীতিও সংযুক্ত করেন। কিন্তু এই ধারা পরে সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া হয়।’

তিনি ইমাম ও খতিবদের বিভিন্ন দাবির প্রসঙ্গে বলেন, ইমাম, খতিব ও মুয়াজ্জিনদের জন্য সার্ভিস রুল প্রণয়নের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। আপনারা যেসব দাবি উপস্থাপন করেছেন, তার বেশিরভাগই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘একজন ইমাম বা মুয়াজ্জিনের চাকরি অনেক সময় মসজিদ কমিটির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে, যা হওয়া উচিত নয়। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহর কৃপায় বিএনপি যদি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পায়, তবে সার্ভিস রুল প্রণয়নের উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অন্যান্য দাবিগুলোও বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ইমাম, খতিব ও মুয়াজ্জিনরা সমাজ সংস্কারক হিসেবে কাজ করেন, তাই তাদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

তিনি জানান, আর্থিকভাবে অসচ্ছল ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মাসিক ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনাও বিএনপির রয়েছে।