শিরোনাম

ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের প্রতি মানবিক আচরণের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “চিড়িয়াখানাকে শুধু রাজস্ব বা বিনোদনের মানদণ্ডে বিবেচনা করা উচিত নয়। এটি দেশের বিশেষ পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।”
তিনি আজ সকালে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হলরুমে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে আয়োজিত “বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার বর্তমান অবস্থা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান এবং মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার।
মূলপ্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ডা. এ বি এম শহীদ উল্লাহ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং ব্রিগেডিয়ার তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।
ফরিদা আখতার বলেন, “চিড়িয়াখানা বর্তমানে যে সংকটে রয়েছে, তার সমাধান কোনো একক ব্যক্তি, এমনকি ডিজি বা পরিচালক একা চাইলে সম্ভব নয়। কারণ, এ সমস্যা বহু বছর ধরে চলে আসছে। তাই অধিদপ্তর, চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “কর্মশালায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পাওয়া গেছে, যা নিজেদের মধ্যে মিটিং করলে পাওয়া যেত না। আমরা আগামীতে এমন একটি কমিটি গঠন করবো, যেখানে সব শ্রেণির অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে প্রতি মাসে সবাই বসে চিড়িয়াখানার উন্নয়নে কী কী করা যায় তা নির্ধারণ করা হবে।”
উপদেষ্টা বলেন, “চিড়িয়াখানার প্রাণীদের সংরক্ষণ পরিকল্পনা শুধু চিড়িয়াখানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়। কোন কোন প্রাণীকে উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে স্থানান্তর করা যায় কি না, সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “যেসব প্রাণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে, সেগুলোকে চিড়িয়াখানায় রাখা হবে কি না বা অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হবে কি না, সে বিষয়েও আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান চিড়িয়াখানার প্রাণীদের নিয়ে গবেষণার আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে প্রাণীকে গবেষণার জন্য বাইরে পাঠানো হবে না। যদি গবেষণা করতে হয়, তবে গবেষকদের চিড়িয়াখানায় এসে, সেখানকার পরিবেশেই গবেষণা করতে হবে।”