বাসস
  ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:২৫
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৮

হাসিনাসহ রেহানা পরিবারের তিন মামলায় আরও ১১ জনের সাক্ষ্য

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। কোলাজ : বাসস

ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ‎‎‎ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা তিন মামলায় আরও ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে তিন মামলায় ৬৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলাগুলোতে আরও অভিযুক্ত রয়েছেন, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

আজ শনিবার ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে পৃথক তিন মামলায় তারা সাক্ষ্য দেন। এরপর আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

এর মধ্যে শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। তারা হলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গণি, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার উজ্জ্বল হোসেন ও গাজীপুরের কালিগঞ্জের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান।

আজমিনা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন চারজন। তারা হলেন- প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গণি, গাজীপুরের কালিগঞ্জের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান, কর আইনজীবী হানিফ দিহিদার ও কর অঞ্চল ১০ এর অফিস সহায়ক আবদুর রহিম।

এদিকে, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন চারজন। তারা হলেন- প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গণি, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার উজ্জ্বল হোসেন, গুলশানের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম ও গাজীপুরের কালিগঞ্জের সাবেক সাব রেজিষ্ট্রার জাহিদুর রহমান।

আদালতের পেশকার বেলাল উদ্দিন বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া।

এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

একইভাবে আজমিনা সিদ্দিকও ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেন। তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন আফনান জান্নাত কেয়া।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

একই অভিযোগে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস. এম. রাশেদুল হাসান। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এস. এম. রাশেদুল হাসান।

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরিচালক শেখ শহিদুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।