বাসস
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:৩৫

পুরুষের পাশাপাশি নারী জেলেদেরও কার্ড থাকতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আজ রাজধানীর একটি হোটেলে সিএনআরএস আয়োজিত এক নীতি সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: পিআইডি

ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জেলে পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরও কার্ড থাকতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের দেয়া জেলে কার্ড মাত্র ৪ শতাংশ নারী জেলের নামে বরাদ্দ থাকে। অথচ যারা মাছ ধরে তাদের পুরো পরিবার এ কাজে যুক্ত। এ প্রক্রিয়ায় অধিকাংশ সময় নারীদের বেশি কাজ করতে হয়। তাই পুরুষ জেলেদের সঙ্গে নারীদেরও কার্ড দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

আজ রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বেসরকারি গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস) আয়োজিত ‘টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জাতীয় নীতি সংলাপ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, আমাদের জেলেদের বিশেষত নারী জেলেদের নিয়ে আরো বেশি কাজ করতে হবে। এখন পর্যন্ত নারীদেরকে কৃষকের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। জেলে সম্প্রদায়ের আইনগত সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড় তুফানে অনেক জেলে মারা যায়, কেউ হারিয়ে যায়, সেসব পুরুষের হদিস না থাকায় তাদের স্ত্রীরা ব্যাংকের টাকাও তুলতে পারে না।

তাছাড়া নারীকে বিধবা ভাতাও দেয়া যায় না। এসব আইনি জটিলতা দূর করতে হবে।

উপদেষ্টা আরো বলেন, আমাদের আইনগুলো পুরুষদের কথা চিন্তা করে প্রণয়ন করা। সেখানে নারীদের স্থান খুব কম। আগের মৎস্য আইনও একই ধরনের। তাই মৎস্য আইনের খসড়া ২০২৫-এ আমরা এ সকল সমস্যার সমাধানে দৃষ্টি দিয়েছি। নারীদের স্বীকৃতি দিতে হলে সংখ্যা বাড়াতে হবে। এসব ঘাটতি পূরণে আমরা কাজ করছি।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা আগের তালিকা অনুসন্ধান করে দেখেছি—মৎস্যজীবী নয় এমন ব্যক্তিরা, মৎস্যজীবী কার্ড নিয়ে গেছে। এখন সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। আমরা চাই যেন প্রকৃত জেলেরা কার্ড পেতে পারে। সেইসঙ্গে যে পরিবারে পুরুষ জেলের কার্ড থাকবে সেখানে নারীদেরও থাকতে হবে।

কাঁকড়া  ও ঝিনুক মানুষের খাদ্যের অংশ, এটিকে বন অধিদপ্তরের সংজ্ঞা থেকে বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ফরিদা আখতার। তাছাড়া যারা কীটনাশক ব্যবহার করে মাছ ধরছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জলমহাল ইজারা সম্পর্কে তিনি বলেন, জলমহালের কাছের মানুষের নামে অন্যরা জলমহাল ইজারা নেয়। এক্ষেত্রে এ পেশার সঙ্গে জড়িত জেলেদের ইজারা দিতে হবে।

জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের বিষয়ে ফরিদা আখতার বলেন, মাছ ধরা নিষিদ্ধ করার সময়ে যতজনকে ভিজিএফ কার্ডের আওতায় সহযোগিতা দেয়া দরকার তা দেয়া সম্ভব হয় না। এর পরিমাণ ও সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

সংলাপে সরকারি কর্মকর্তা, গবেষক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সিভিল সোসাইটি, শিক্ষাবিদ এবং উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্য সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।