শিরোনাম
ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, দেশের শীর্ষ দুই মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও গ্রামীণফোন লিমিটেড বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি সেবা চালু করায় আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ডিজিটাল ভবিষ্যতের দিকে গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ নিল।
গতাকাল সোমবার রবি ও গ্রামীণফোন দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি সেবা চালু করার পর নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সীমিত পরিসরের বাণিজ্যিক ফাইভ-জি চালুর বিষয়টিও অত্যন্ত জরুরি। এটি রেগুলেটর ও অপারেটরদের শিক্ষণ প্রক্রিয়া তৈরি করে, প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও গ্রাহক অভিজ্ঞতা যাচাই করতে সহায়তা করে। তবে গ্রাহকরা প্রকৃত সুবিধা তখনই পাবেন, যখন এই সীমিত ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক একটি বৃহৎ পরিসরের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে রূপ নেবে, যা দেশের শহর ও গ্রাম উভয় অঞ্চলে কোটি কোটি মানুষকে বৈষম্যহীনভাবে সেবা দেবে।
তিনি বলেন, একই সাথে অপারেটর ও রেগুলেটরদের ফাইভ-জি ইকোসিস্টেম তৈরি করতে হবে—সাশ্রয়ী ফাইভ-জি মোবাইল, স্মার্ট ওয়্যারেবল, এআর/ভিআর, আইওটি ইত্যাদি প্রযুক্তি সহ। রোবোটিকস, রোবোটিক আর্মস, রিমোট সার্জারি, নেটওয়ার্ক স্লাইসিং এর মত ইউজ কেইস খুঁজে বের করতে হবে। পাশাপাশি কভারেজ, ক্যাপাসিটি, মবিলিটি, এক্সেসিবিলিটি, রিটেইনেবিলিটি ও ইন্টেগ্রিটি—এই মানদণ্ডগুলোতে উচ্চমান ৫জি নিশ্চিত করতে হবে। ২জি বা ৩জি বন্ধ করে সেখানে স্পেকট্রামগুলো অবমুক্ত করা হবে, যা ফাইভ-জি’র কভারেজ লেয়ারের মান বাড়ানোর অন্যতম উপায়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, যেসব এডটেক, এগ্রোটেক, হেলথ টেক, গভ টেক এবং ইন্টাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন সংক্রান্ত কমিউনিকেশন টেকনোলজি, কিংবা আইওটি সেবায় অত্যন্ত কম ল্যাটেন্সি লাগে, এ জাতীয় মিশন ক্রিটিক্যাল, বিজনেস ক্রিটিক্যাল সেবা ইনোভেশন করতে হবে। সেসব গ্রাহক সেবা এবং শিল্পগত রুপান্তর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেই ডিস্কভার করতে হবে। বাংলাদেশে ফাইভজি ইউজকেইস নেই বলে প্রযুক্তিকে ব্লেইম করে বসে থাকলে হবে না বরং নিউ মার্কেট ডেভেলপ করতে হবে। ফাইভ-জি ডিভাইস বাড়াতে কিস্তিতে ম্যাসিভ অ্যামাউন্টে হ্যান্ডসেট বিক্রিতে যেতে হবে, সেজন্য ফাইনান্সিয়াল সল্যুশনে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—ফাইভ-জি ব্যবহার করে সমাজের প্রতিটি স্তরের জীবন ও জীবিকাকে উন্নত করা এবং শিল্পের বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র প্রতিটি খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করা। তখনই ফাইভ-জি হবে প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের উদ্ভাবন, উৎপাদনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সফলভাবে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের রোল আউট সম্পন্ন করতে প্রয়োজন অপটিক্যাল ফাইবারের সহজীকরণ। আমরা দায়িত্ব প্রাপ্তির পরে মোবাইল অপারেটরদেরকে ডিডব্লিওডিএম ফ্যাসিলিটি, ডার্ক ফাইবার ভাড়া নেওয়ার সুবিধা দিয়েছি।
তিনি বলেন, বর্তমানে মোবাইল টাওয়ার ফাইবারাইজেশনের হার মাত্র ২০-২২ শতাংশ। নতুন টেলিকম পলিসি মতে এই হার ৮০শতাংশ করার টার্গেট দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অব্যবহৃত অপটিক্যাল ফাইবার কোরের সমন্বয়ে ন্যাশনাল ফাইবার ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে অ্যাক্টিভ এবং প্যাসিভ শেয়ারিং এর পলিসি আসছে। আমরা মনে করি, ফাইবারাইজেশন সহজ হলে দেশের মানসম্পন্ন ফোর-জি এবং ফাইভ-জি সেবা সম্প্রসারণে গতি পাবে। এর বাইরেও, মানসম্পন্ন ফোর-জি এবং ফাইভ-জি সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় তরঙ্গ বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি রবি ও গ্রামীণফোনের এই যাত্রার সাফল্য কামনা করে বলেন, একটি আধুনিক, ভবিষ্যৎ-প্রস্তুত বাংলাদেশ গঠনে আমরা সহযোগিতা অব্যাহত রাখব। সে অনুযায়ী সব ধরনের রেগুলেটরি সাপোর্ট অব্যাহত রাখব।