শিরোনাম
নীলফামারী, ১৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): জেলায় উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি আরও বেড়েছে। পানিবন্দী হাজারো মানুষ।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকার কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র।
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুল্লা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে এসব ইউনিয়নের অন্তত ২৫ গ্রামের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এসব পরিবারের অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাঁড়সিংহেশ্বর গ্রামের আব্দুল মতিন (৫৫) বলেন, ‘গত রাত থেকে পানিবন্দী রয়েছি। এখন ক্রমেই পানি বাড়ছে, শেষে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে’।
তিনি জানান, তার মত অবস্থা গ্রামের অন্তত ৫০০ পরিবারের। নদীর পানি আরও বাড়লে এসব পরিবারকে ছাড়তে হবে বাড়ি-ঘর।
খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রামের বিপুল রায় (৪০) বলেন,‘নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে তলিয়ে গেছে এলাকার আমন ক্ষেত। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছেন’।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন,‘ তিস্তা অববাহিকার বড় গ্রাম ঝাড়সিংশ্বর ও পূর্ব ছাতনাই। নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে ওই দুই গ্রামের এক হাজার ২০০ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দী মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে শুরু করেছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র মতে, উজানের ঢলে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর সকাল নয়টায় চার সেন্টিমিটার বেড়ে ১৫ সেন্টিমিটার এবং বেলা ১২টায় আরও তিন সেন্টিমিটার বেড়ে ১৮ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। গতকাল বুধবার সেখানে সকাল ছয়টায় সাত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সকাল নয়টায় পাঁচ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ছয়টায় বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন,‘উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড’।